মুসলমানদের বড় শত্রু কারা – পৃথিবীতে দুইটি জাতি মুহাম্মাদ ﷺ এর সময় থেকেই মুসলমানদের বিরুদ্ধে একত্রে ষড়যন্ত্র করে আসছে। মুশরিক এবং ইহুদিরা।
সাধারণত ইহুদি-খ্রিষ্টানরা যদিও পরস্পর কাছাকাছি মুসলমানদের বিরুদ্ধে। কিন্তু মুশরিকরা খ্রিষ্টানদের চেয়েও এক ধাপ অগ্রসর।
তাইতো যখন মক্কার মুশরিকরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামল তখন তাদের পরামর্শদাতা ছিল মদীনার ইহুদিরা।
বিপরীতে যখন মদীনার ইহুদিরা যখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করল তখন তাদের পাশে এসে দাঁড়াল মক্কার মুশরিকরা।
বর্তমান সময়ের দিকে লক্ষ্য করুন। গাজ্জায় গণহত্যা চালাচ্ছে পাপিষ্ঠ ইহুদিরা। কিন্তু এই জেনোসাইডে উল্লাস প্রকাশ করছে ভারতের মুশরিকরা।
তারা বিবৃতি জারি করছে, ভিডিও প্রকাশ করছে ইহুদিদের পক্ষে। ক্ষেত্রবিশেষে তারা ডেভিড স্টার, নেতানিয়াহু, ট্রাম্প, বাইডেনের পূজা করছে।
মন্তব্য করে বলছে, আমাদের কিছুই দেওয়া লাগবে না। আমরা শুধু গাজ্জায় গিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাই। ঘটনা এখানেই শেষ নয়।
তুফানুল আকসা যুদ্ধের পর থেকে অনেক ভারতীয় ইসরাইলের পক্ষ হয়ে গাজ্জায় যোদ্ধা, সুইপার, জায়োনিস্টদের সহকারী হিসেবে গিয়েছে। এগুলো ওপেন সিক্রেট।
আমেরিকার সরকার যতটা না ইসরাইলের পক্ষে থেকে খুশী হয় তার চেয়েও হাজার গুণ বেশি খুশী হয় এই মুশরিকরা।
অথচ ইহুদি আর মুশরিকদের আকিদা পুরো ৯০ ডিগ্রি উলটো। ইহুদিরা গরু খায়। কিন্তু ভারতীয় মুশরিকরা গরুকে মা মনে করে।
ইহুদিরা মূর্তিপূজা ঘৃণা করে। কিন্তু মুশরিকরা মূর্তিপূজক। এখানের আসল কথা হলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে দুনিয়ার সমস্ত কুফফার শক্তি এক এবং অভিন্ন।
চাই সে ইহুদি হোক কিংবা খ্রিষ্টান হোক কিংবা হিন্দু-বৌদ্ধ হোক কিংবা চাইনিজ হান নাস্তিক হোক। মুসলমানদের বিরুদ্ধে তারা এক।
নবীজির সময় থেকেই এত এত কাফিরদের মধ্যে মুসলমানদের প্রধানতম শত্রু ছিল ইহুদিরা।
তারা নবীজিকে হত্যার চেষ্টা করেছে, উসমান রা. কে হত্যা করেছে, আলী এবং মুয়াবিয়া রা. এর মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে, উমাইয়া-আব্বাসী খিলাফতের মধ্যে ঘাপটি মেরে ষড়যন্ত্র করেছে, সুলতান আব্দুল হামিদকে পদচ্যুত করেছে, উসমানী খিলাফতকে ধ্বংস করেছে।
২
এককালে এই ইহুদিরা ছিল খ্রিষ্টানদের এক নম্বর শত্রু। কিন্তু রেনেসাঁ, এনলাইটেনমেন্টের পর জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র প্রবেশ করিয়ে এবং খ্রিষ্টধর্মে বিকৃত প্রবেশ করিয়ে ইহুদিরাই হয়ে গেল খ্রিষ্টানদের বন্ধু!
এককালে যে-ই ইহুদিদেরকে ইউরোপ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হতো, আজ সেই ইহুদিদেরকে বাঁচানোর জন্য পুরো ইউরোপ-আমেরিকা একত্রিত হয়ে যায়! এসব এক দিনে হয়নি। দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়িত হওয়ার মাধ্যমে এসব হয়েছে।
উপমহাদেশে আমাদের প্রধানতম শত্রু হলো ভারতের মুশরিক হিন্দুরা। এদের দেখতে যতটা সাদাসিধে মনে হোক না কেন, তারা মুসলমানদের হত্যা করতে এবং মুসলিম নারীদের ইজ্জত কেড়ে নিতে এক মুহূর্তও ভাববে না।
উগ্র হিন্দুত্ববাদ এখন ভারতের রাজনীতি ও আদর্শের অংশ। এককালে বলা হতো সেক্যুলার ভারত। এখনও যদিও নামকাওয়াস্তে সেক্যুলার শব্দ রয়েছে গেছে।
কিন্তু বাস্তবে ভারত হলো হিন্দুত্ববাদীদের একটি দেশ। এখানে কোনো মুসলমান নিরাপদ নয়। প্রতিনিয়ত নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে ভারতীয় মুসলমানরা।
ইহুদি, খ্রিষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ, হান, নাস্তিকসহ সকলের বর্তমান নেতা হলো আমেরিকা। আমেরিকার সুপার পাওয়ার হওয়ার মাধ্যমে তারা বিশ্বময় মুসলমানদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার দুঃসাহস পায়।
ইয়েমেন, সোমালিয়া, গাজ্জা কিংবা বিশ্বের যে-ই কোনো মুসলমানদের আক্রান্ত ভূখণ্ডের দিকে তাকালেই এটি পরিষ্কার হয়ে যায়।
তাই আমরা যদি শত্রুদের একটি ক্রমানুসারে সাজাই তাহলে এটি এমন হতে পারে।
১. আমেরিকা
২. ইহুদি
৩. মুশরিক হিন্দু
৪. হান চাইনিজ নাস্তিক
প্রথমটা মরে গেলে পরেরগুলো এমনিতেই নিস্তব্ধ হয়ে যাবে। তবে উপমহাদেশে আমাদের শত্রুদের প্রথম হলো মুশরিকরা। কেননা এখানে এরাই হলো আমেরিকার ব্যাটেলিয়ন। এদেরকে আমেরিকা ও ইহুদিরাই এই ভূমিতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেবে। তাই গাযওয়ায়ে হিন্দ যেমন চিরসত্য, তেমনি আল্লাহর কালিমা এই শতাব্দীতে বুলন্দ হবে এটাও চিরসত্য। আমাদের জন্য এখন প্রয়োজন দাওয়াত, ইদাদ, জিহাদ। একটার সাথে আরেকটা উৎপ্রতভাবে জড়িত। শুধু দাওয়াত দিয়ে পরিপূর্ণ কাজ হবে না, আবার শুধু ইদাদে ক্ষান্ত থাকলেই বিজয় আসবে না। আবার প্রথম দুইটা ছেড়ে দিয়ে শুধু জিহাদে নেমে পড়লেই আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা হবে না। প্রতিটা জিনিসের জন্য ময়দান প্রয়োজন। তাই ময়দান তৈরি করা একান্ত জরুরি। ইলহাক বিল কাফেলা। জামাআহবদ্ধ থাকা ছাড়া এই উম্মাহর মুক্তি আসবে না।