নাটকের নামে সমকামিতা প্রচার

নাটকের নামে সমকামিতা প্রচার – ওয়ালটন দেশের নামকড়া একটি কোম্পানী। Walton এর ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার, ল্যাপটপ দেশজুড়ে বিখ্যাত। বছরখানেক আগে একটি ভিডিওতে ওয়ালটনের মালিককে দেখেছিলাম। পাঞ্জাবি, টুপি পরিহিত পাক্কা একজন হুজুর।

বহু আগ থেকেই বাংলাদেশে ট্রান্সজেন্ডারের আড়ালে সমকামিতা প্রচার করছে ব্র‌্যাক, বন্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার ও আরো কিছু প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিবর্গ।

ইউরোপ-আমেরিকা থেকে ফান্ড পেয়ে এই বিকৃত রুচির যৌনাচার এই দেশে প্রতিষ্ঠার পেছনে কাজ করছে তারা।

প্রতি ঈদে দেশের তরুণ সমাজকে টার্গেট করে নতুন নতুন নাটক প্রকাশ করে প্রযোজকরা ও টিভি চ্যানেলগুলো।

এসব নাটকগুলোতে স্পন্সর থাকে অনেক কোম্পানী। এই ঈদে “রূপান্তর” নামে একটি ট্রান্সজেন্ডার মতবাদের নাটক প্রকাশ করে। আর এই নাটকের স্পন্সর ছিল ওয়ালটন কোম্পানী।

বিষয়টা প্রথমে দেখে আশ্চর্য হয়েছিলাম। কিন্তু বিস্তারিত ঘাঁটাঘাটি করতে গিয়ে আরো কিছু তথ্য সামনে আসলো। Walton আরো বহু আগ থেকেই এই এজেন্ডার সামনে জড়িত।

তারা হিজড়াদের চাকুরি দেওয়ার নামে নারী থেকে পুরুষের বেশ ধারণ করা ট্রান্সজেন্ডারদের চাকুরি দিয়েছে। এমনকি কিছু কিছু ট্রান্সজেন্ডার সোস্যাল মিডিয়াতে সরব।

ওয়ালটনের এই বিকৃত কার্যকলাপ সামনে আসার পর অনেক মানুষ ওয়ালটন বয়কটের ডাক দিয়েছেন। এটি উত্তম জিনিষ।

মার্কেটে যখন তাদের গ্রাহক কমে যাওয়া শুরু করবে তখন বাধ্য হয়ে হলেও ফিরে আসবে। তবে এটাই সমাধান নয়।

কথায় আছে, “মানুষের স্বভাব সহজে বদলায় না।” এই কথার সাথে আরো একটা শব্দ যুক্ত করা যায়। “মানুষের স্বভাব ও চিন্তাধারা সহজে বদলায় না।”

নিচে আমরা ওয়ালটনের এই দ্বিচারিতা প্রকাশ পাওয়ার পর বেশ কিছু যোগ্য ব্যক্তিদের লেখা একত্রিত করে তুলে ধরছি।

মিডিয়ার মাধ্যমে সমকামিতা প্রচার – নাটকের নামে সমকামিতা প্রচার

মিডিয়ার ভেল্কিবাজি শুরু হয়ে গেছে৷ এই দামড়াটা মেয়েদের জামা পরে।

ডাক্তার বলছে তার ডিএসডি৷ ৩০ বছর পার হওয়ার পর নাকি তার ফিমেল হরমোন সিক্রেট হওয়া শুরু হইছে।

একটা গজামিল দিয়ে, সাথে কচি করে একটু ইমোশন ঢেলে দিয়ে জিনিসটাকে খাওয়ানো হচ্ছে দর্শককে।

এরা সবসময় দামড়া থেকে দামড়ি হবার কাহিনী দেখায়, দামড়ি থেকে দামড়া নয়। কারণ কী জানেন? রক্ষণশীল বাঙালি সমাজে পুরুষ রিস্ক নিয়ে যত সহজে নারী হতে পারে, একটা নারীর জন্য বিষয়টা একটু কঠিনই। যেটা সহজ সেদিকেই উস্কানিটা থাকবে৷

নাটকের নামের মধ্যে সবচেয়ে বড় মেসেজটা দিয়ে রাখছে। খেলাটা মূলত শব্দের। এখানে কয়েকটি পয়েন্ট মনে রাখা দরকার।

১. ৩০ বছরের চাপদাড়িওয়ালা দামড়া পোলা হঠাৎ করে কখনোই মেয়ে হয়ে যেতে পারে না।

২. ডিএসডি একটা মেডিকেল কন্ডিশন। বেশির ভাগ পেসেন্ট চাইল্ডহুডেই ডাইগোনোসড হয়, কিছু পেসেন্টের ডায়গোনোসিস হয় পিউবার্টিতে। তবে জলজ্যান্ত দামড়া একটা পুরুষের ৩০ বছরের পর ফিমেল হরমোন তৈরি হওয়া শুরু হবে, এটা কেবল নাটকেই পসিবল।

৩. নাটকের নাম থেকে বোঝা যায় এখানে শব্দের খেলা চলছে। রূপান্তর শব্দটা প্রথম আলোতে মাঝে মাঝেই আপনারা দেখবেন। আপনার সন্তানের ক্লাসের বই লেখা হইছে আপনার সন্তানকে রূপান্তরমূখী মানুষ বানানোর জন্য। মশিউজ্জমানরা যে নীলনকশা করছে সেটার ছবিসহ আপনাদের কাছে বারবার তুলে ধরেছি। নাটকের নামটা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৪. এই নাটকগুলো একের পর এক আসতে থাকবে সামনে। ক্লাসের বই দিয়ে আপনার সন্তানের মগজধোলাই চলবে আর মিডিয়া এটাকে ইমোশনাল করে খাওয়াবে আপনার সন্তানকে। একসময় আপনি হারিয়ে ফেলবেন আপনার আদরের সোনামনিকে।

এই দেশে শক্তিতে আমরা মাইনরিটি, কিন্তু সংখ্যায় মেজোরিটি। এই সংখ্যাই আমাদের শক্তি। আমাদের কর্ডিনেটেড রেসপন্সকে এখনো আমাদের শত্রুরা ভয় পায়।

দেখেন, একরাতের প্রতিবাদে নাটকটা ইউটিউব চ্যানেল একসেস রেস্ট্রিক্টেড করছে। ওয়ালটন পেটে লাথি পড়ার ভয় পাচ্ছে।

ওয়ালটন যতক্ষণ না পাবলিকলি ক্ষমা চাইবে এবং বিষয়টাকে আর কখনো প্রমোট করবে না মর্মে ঘোষণা না দিবে, ততক্ষণ আমরা তাদের বয়কট করবো।

ওয়ালটন দেশীয় প্রডাক্ট, আশা করবো, ব্যবসা বাচানোর জন্য হলেও তাদের সুমতি ফিরবে।

ভায়েরা, যুদ্ধটা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে৷ পাঠ্যপুস্তকে যা ঢুকানো হয়েছে সেগুলো বাদ না দিলে আমাদের ভবিষ্যৎ খুব খারাপ হতে যাচ্ছে। 

ব্র্যাক এবং মশিউজ্জমানদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে। এটা ঈমানের প্রশ্ন, বাঙালি মুসলমানের অস্তিত্বের প্রশ্ন।

আজ চুপ থাকলে আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার জন্য প্রস্তুত থাকুন। [1]

চলমান ষড়যন্ত্রের নতুন রূপ – নাটকের নামে সমকামিতা প্রচার

দেশে সুপরিকল্পিতভাবে LGBTQ বা সমকামিতা এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে অনেক বছর ধরে।

অ্যামেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্ব ফান্ডিং করছে, আর দেশে সমকামিতা প্রচারে কাজ করছে বিভিন্ন এনজিও। এই তথ্যগুলো আমরা সবাই জানি।

এসব বাস্তবতার বিবেচনা করলে, ওয়ালটনের মতো প্রতিষ্ঠান একেবারে কোন কিছু না জেনেবুঝে এরকম টপিকে নাটক ফান্ড করে ফেলেছে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন।

তবে ওয়ালটন-এর সামনে আত্মপক্ষ সমর্থনের একটা সহজ উপায় আছে।

তারা একটা প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে এলজি টিভি এজেন্ডা, বিশেষ করে ট্র্যান্সফর্মাসদের সাথে নিজেদের সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেবে, এবং জাতির কাছে ক্ষমা চাইবে। আগামীতে এমন না করবার অঙ্গীকার করবে।

এতোটুকু হলে হয়তো ধরে নেয়া যেতে পারে যে তারা আসলেই ভুলের ব্যাপারে লজ্জিত এবং সংশোধনের আগ্রহী।

উল্লেখ্য জন্মগত হিজড়া বা ইন্টারসেক্স মানুষদের কর্মসংস্থান এবং সামাজিক পুনর্বাসনের উদ্যোগকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ সমর্থন করে এবং সাধুবাদ জানায়।

তবে মনে মনে ট্র্যান্সফর্মার আর জন্মগত হিজড়া কখনোই এক না।

পশ্চিমা সকমাতিা এজেন্ডার বিরোধিতা মুসলিমবঙ্গের মানুষ করেই যাবে, ইন শা আল্লাহ। [2]

 ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামিতা প্রচারের চেষ্টা

দেশের বহু প্রতিষ্ঠান বিদেশী ফান্ড পাওয়ার জন্য সমকামিতা মতদর্শকে নিজেদের জীবনের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নেয়।

এর অন্যতম কারণ হলো, তাদের ভবিষ্যতের পৃথিবী নিয়ে কোনো চিন্তা নেই।

ধর্ম নিয়ে তাদের কোনো আবেগ নেই। তাদের সন্তানরা কেমন হবে, এ নিয়ে বিস্তারিত কোনো প্ল্যান ফিকির নেই।

তাই সমকামিতার মতো জঘন্য মতবাদ প্রচার করছে তারা। আমাদের বর্তমান সময়ে সচেতন লোক অনেক আলহামদুলিল্লাহ।

পাঠ্যপুস্তকে যেভাবে এই সমকামিতা আদর্শ বাচ্চাদের অন্তরে গেঁথে দেওয়া হচ্ছে, হয়তো ভবিষ্যতে এটাকে বাংলাদেশের মানুষ মেনে নিবে। কারণ, সেই সময়ে যারা থাকবে তারা অধিকাংশ হবে সমকামী।

সম্প্রতি ওয়ালটন এই কাজের দুঃসাহস দেখিয়েছে। আর পূর্বেও আড়ং, পাঠাও, এপেক্স এই সমকামীদেরকে ফান্ড দিয়েছে ও স্পন্সর করেছে।

বাংলাদেশে হিজড়া জনগোষ্ঠী খুবই অবহেলিত একটি গোষ্ঠী। তাদের প্রতি দেশের মানুষের সহমর্মিতা আছে। দেশের মোট জনসংখ্যার ৩% ও হবে না তারা।

তাদেরকে নিয়ে সরকারিভাবে ও বেসরকারিভাবে পরিকল্পনামাফিক কোনো প্রকল্প হাতে নিলে ভালো একটি সিদ্ধান্ত হবে।

তবে এখানে একটি সমস্যা আছে। আরো বহু আগে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় হিজড়াদেরকে সরকারি চাকুরি দিতে চেয়েছিল।

তখন কিছু হিজড়াদেরকে সিলেক্ট করে মেডিকেল টেস্ট করে দেখে তাদের অধিকাংশ হিজড়া নয়।

গুগল, আন্তর্জাতিক নিউজ, মিডিয়া হিজড়া এবং ট্রান্সজেন্ডারকে একই শব্দে ও একই কাতারে পরিবেশন করছে। তাই এটি হলো অনেক উদ্বেগের বিষয়।

অনেকে না বুঝেই ট্রান্সজেন্ডারদেরকে সাপোর্ট করে।

জিজ্ঞাসা করলে বলে, এটা তো হিজড়াদের আন্দোলন। সেই ব্যক্তির উচিৎ LGBTQ এর ফুল মিনিংটা ভালোভাবে দেখা।

ট্রান্সজেন্ডাররা হিজড়া হলে সমকামী ও গে দের সাথে তাদেরকে একত্রে কেন উল্লেখ করা হয়? এখানেই হলো মস্ত বড় ঝামেলা। এখানেই হলো ফাঁদ।

ফুটনোট

[1] ডা. মাহদী হাসান ভাইয়ের ফেসবুক থেকে সংগ্রহিত।

[2] আসিফ আদনান ভাইয়ের ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগ্রহিত।

এছাড়াও বাংলাদেশে এই ফিতনা নিরসনের প্রচেষ্টায় যারা অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন, তাদের লেখাগুলোও আমার নিকট মূল্যবান।
কিন্তু তাদের লেখাগুলো ছোট ছোট হওয়ায় আর দেই নি। আর উপরের ‍দুইজনের লেখাতেই অনেক কথা চলে এসেছে।
ড. সরোয়ার হোসাইন, শামসুল আরেফিন শক্তি, আসিফ মাহতাব ও আরো অনেক ভাইয়েরা এ নিয়ে কাজ করছেন। তাদেরকে জাযাকাআল্লাহ।

লেখাটি শেয়ার করতে সর্ট লিংক কপি করুন

হিজড়া সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য কি

ইন্টারসেক্স হলো সেই সকল ব্যক্তি, যাদের শারীরিক গঠনে নারী-পুরুষের মিশ্র বৈশিষ্ট্য থাকে। এটাকে Disorder of sex development (DSD) ও বলা হয়। এমন মানুষদের ক্রোমোসোমের ডিসঅর্ডার বা অমিল কাজ করে। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ২০০০ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন এমন ইন্টারসেক্স ব্যক্তি পাওয়া যায়। আর এটি মোট জনসংখ্যার ০.০৫%।

ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়াদের মধ্যে পার্থক্য কি

ট্রান্সজেন্ডার বলা হয় সমকামীদেরকে। আর হিজড়া বলা হয় ইন্টারসেক্স বা শারিরিকভাবে ডিসঅর্ডার ব্যক্তিদেরকে।

ট্রান্সজেন্ডার অর্থ কি

ট্রান্সজেন্ডার বলা হয় সমকামিতাকে। LGBTQ এর অন্যতম একটি পার্ট হলো ট্রান্সজেন্ডার

Scroll to Top