ট্রান্সজেন্ডার আন্দোলনে দুর্বল কারা

ট্রান্সজেন্ডার আন্দোলনে দুর্বল কারা , এটা এক কথায় দেখিয়ে দেওয়ার উপায় নেই। এককালে যারা এর বিরোধিতা করতো আজ দেখা যাচ্ছে, তারা এর পক্ষে সাফাই গাইছে।

বাংলাদেশে যত রাজনৈতিক দল আছে, হোক বামপন্থী কিংবা ডানপন্থী, উভয়েরই মূল লক্ষ্য সেক্যুলারিজম। আর সেক্যুলার হতে গিয়েই তারা পশ্চিমাদের মিত্রে পরিণত হয়।

পশ্চিমা দুনিয়া হলো, বর্তমান পৃথিবীর সবেচেয়ে পাপিষ্ঠ ভূমি। এমন কোনো পাপ নেই যে, তারা করছে না। আল্লাহ তা’আলা হাজার হাজার বছর আগে লূত আ. এর জাতিকে ধ্বংস করেছিলেন সমকামিতায় লিপ্ত হওয়ার কারণে।

এই ঘটনাটি কুরআন, বাইবেল (ইনজিল), ওল্ড টেস্টামেন্টে (তাওরাত) আছে। পশ্চিমা দুনিয়ার বড় একটি অংশ খৃস্টান। আর এরপরই রয়েছে ইহুদিরা।

তারা সমকামিতার শাস্তি সম্পর্কে পূর্ণ অবগত। তারপরও সমকামিতা বাস্তবায়নের জন্য তারা উঠেপড়ে লেগেছে। এই প্রকল্পে ডলার দিচ্ছে বড় বড় কোম্পানীগুলো।

বিনিয়োগ করছে বিভিন্ন রিসার্চে ও ঔষধে। সমকামিতা বা ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটি যত বড় হবে, এই ব্যবসা ততই ফুলে ফেঁপে উঠবে।

পর্ন ইন্ডাস্টির খারাপ লক্ষণ সমূহ জেনেও যেমন এদিকে বিনিয়োগ করে বড় বড় বিজনেস থাকার কারণে, তেমনি ট্রান্সজেন্ডারের খারাপ লক্ষণ জানার পরও তারা তা লুকিয়ে এটি স্বাভাবিকরণ করার চেষ্টা করছে।

এবার মূল পয়েন্টে আসি।

দেশের ডানপন্থী দলের কেন এত সমকামিতাপ্রীতি?

বাংলাদেশে সমকামিতা বা ট্রান্সজেন্ডার অধিকার আদায়ের জন্য গোপনে একটি চক্র কাজ করছিল আরো বহু আগ থেকে।

২০০৪/২০০৬ সাল থেকেই গোপনে এসব কার্যক্রম চলমান। কিন্তু এসব জিনিষ আমাদের চোখের সামনে এসেছে অনেক পরে।

ট্রান্সজেন্ডার সম্পর্কে ২০১৬ সালে আসিফ আদনান ভাই প্রথম সতর্ক করেছিলেন।

এরপর এসব নিয়ে অল্প অল্প কথা হলেও ২০২৩ সালে পাঠ্যবইতে এই বিষয়টা চলে আসার পর অনেকেই প্রতিবাদ করেছেন।

আস্তে আস্তে লেখালেখি, সভা-সেমিনার, অ্যাক্টিভিটি শুরু হয়েছে। এখন তো অবস্থা আরো ভয়াবহ। এই পুরো সময়েই দেশের ডানপন্থী দল বিএনপি সমকামিতা নিয়ে বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ করে নি।

এর মূল কারণ হলো, তারা আমেরিকাঘেঁষা। আমেরিকার দয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়। আর আমেরিকায় এটি বৈধ।

২০২৩ সালে উগান্ডায় এই সমকামিতার বিরুদ্ধে আইন পাশ করানোর প্রক্রিয়া চলাকালীন আমেরিকা মানবাধিকারের নামে অর্থনৈতিক সেনশন ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল উগান্ডার বিরুদ্ধে। 1

ঘানাতে সমকামিতার বিরুদ্ধে আইন পাশ করার আলোচনা চলছে। কিন্তু দেশটির প্রেসিডেন্ট সাক্ষর দিতে ভয় পাচ্ছেন। 2

কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি হলে এমনটা হয়। পশ্চিমা দেশগুলোতে ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামী যদি কোনো ছেলে-মেয়ে দাবী করে তাহলে বাবা-মায়ের বিন্দুমাত্র অধিকার নেই তাকে ফিরিয়ে আনার।

বিএনপির অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব মির্জা ফখরুলের মেয়ের জামাই হলো ফাহাম আব্দুস সালাম। এই ব্যক্তি আবার বই ও লিখে।

কিছুদিন পূর্বে তার ফেসবুকে পোস্টে সমকামিতার পক্ষে বয়ান দিয়ে বলে,

সমকামিতা প্রাকৃতিক। আর তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই তাদের বিরুদ্ধে এভাবে গলা চেঁপে ধরা উচিৎ নয়। তার মূল বয়ানগুলো ফেসবুকে আছে। কিছু আবার ডিলিট করে দিয়েছে।

আসলে এই ব্যাটারা সফট লিবারেল হইতে হইতে কারা সংখ্যাগরিষ্ঠ আর কারা সংখ্যালঘিষ্ঠ, তা নির্ণয় করতে পারে না।

বাংলাদেশে ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামী বা পায়ূকামীরা কতটা পাওয়ারফুল, যা কিছু উদাহরণ দিলেই বুঝা যায়।

সমকামীরা কি সংখ্যাগরিষ্ঠ?

ট্রান্সজেন্ডাররা যদি দেশে অল্প কিছু সংখ্যক হতো তাহলে তারা শেখ হাসিনার সাথে গিয়ে ছবি তুলতে পারতো না।

ডা. মাহদী হাসান স্যার ফাহামের কথার জবাবে বলেছিলেন, তারা সংখ্যায় মাইনোরিটি, কিন্তু শক্তিতে তারা জায়ান্ট।

তারা আমার সন্তানের বইতে ঢুকে যাচ্ছে, মিডিয়া তাদেরকেই পেট্রোনাইজ করতেছে, ক্ষমতার কেন্দ্র তাদেরকে নগ্ন সাপোর্ট দিচ্ছে। তারা দুর্বল কেমনে?

আমরা এত আন্দোলন করেও আমার সন্তানের বই থেকে তাদের সরাতে পারছি না। দুর্বল আসলে কারা? সংখ্যা ছাড়া তো আমাদের কোন শক্তি নাই। মোরার পুলিশিং ই আমাদের একমাত্র শক্তি দেখানোর মাধ্যম।

সারা পৃথিবীতে ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামীদের অবস্থা কেমন, তা যদি আমরা একটু দেখি। তাহলে চিত্রে দেখতে পাই। তারা বলবে,

আমরা দুর্বল। আমাদের বিরুদ্ধে কিছু বললে তোমার গলা টিপে ধরবো।

আমরা দুর্বল, বায়োলজির বেসিক ট্রুথটা উচ্চারণ করলে তোমার চাকরি খেয়ে দেবো।

যদিও আমরা দুর্বল, আমরা তোমাদের সন্তানদের আমাদের মতো বানাবো, তোমরা বাধা দিলে তোমাদের জেলে ভরবো।

আমরা দুর্বল, আমরা যা চাই আমাদের তাই করতে দিতে হবে।

এই হচ্ছে তাদের অবস্থা। বেসিকলি, বর্তমান পৃথিবীতে তাদের চেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট আর নাই।

অথচ, ফ্যাসিবাদ বিরোধী হাইআইকিউ ইনটেলেকচুয়ালের কাছে তারা দুর্বল, তাদের সমালোচনা করা যাবে না। সেলুকাস! বড় বিচিত্র এই ফ্যাসিবাদবিরোধীতা। 3

এতকিছুর পর নিশ্চয় এটা আমাদের বুঝে এসেছে যে, বর্তমানে ট্রান্সজেন্ডার আন্দোলনে দুর্বল কারা ? এর সাপোর্টাররা নাকি এর বিরোধীরা?

ফুটনোট

  1. বিশ্বব্যাংক উগান্ডাকে ঋণ দেওয়া বন্ধ করেছে। কারণ উগান্ডা সমকামিতাকে অবৈধ মনে করে। পড়ুন এখান থেকে ↩︎
  2. অর্থনৈতিক চাপ ও আন্তর্জাতিক ত্রাসের কারণে ঘানার প্রেসিডেন্ট সমকামিতার বিপক্ষে সাক্ষর দেন নি। এ নিয়ে পড়ুন বিস্তারিত এখন থেকে ↩︎
  3. এই লেখাটি ডা. মাহদী হাসান ভাইয়ের ফেসবুক থেকে নেওয়া ↩︎

লেখাটি শেয়ার করতে সর্ট লিংক কপি করুন

Scroll to Top