কোন দেশগুলো ইহুদি রাষ্ট্র হতো?

কোন দেশগুলো ইহুদি রাষ্ট্র হতো? – বর্তমানে ইহুদিরা যদিও ফিলিস্তিন ভূমিকে তাদের রাষ্ট্র হিসেবে দাবী করে, কিন্তু এটি আদৌ ইহুদিদের বিশ্বাসের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়।

অস্টো-হাঙ্গেরিয়ান ইহুদি লেখক থিউডোর হার্জেল প্রথম তার বইয়ের মাধ্যমে ইহুদের নিজস্ব রাষ্ট্রের ধারণা প্রচার করে।

এরপর একটা সময় এটি বড় বড় ইহুদি ব্যবসায়ী, লেখক, রাজনীতিবিদ, ব্যাংকারদের পৃষ্টপোষকতায় এই লক্ষ্যে কাজ করা হয়ে থাকে।

কিন্তু এখানে একটা বিষয়ে প্রশ্ন আসে, শুধুমাত্র কি ফিলিস্তিনই ইহুদিদের রাষ্ট্র হওয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয় নাকি আরো দেশকেও করা হয়েছিল?

আজকে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।

সর্বপ্রথম যখন ইহুদিরা একটি নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা প্রকাশ করে তখন ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমূহ ও যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিন ছাড়া আরো অনেকগুলো জায়গায় বসতি স্থাপনের প্রস্তাব দেয়।

আলাস্কা, অ্যাঙ্গোলা, লিবিয়া, ইরাক, দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনাসহ অন্তত ৩৪টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানের পরিকল্পনা আলোচিত হয়।

এমনকি ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া উগান্ডায় ইহুদি বসতি স্থাপনের প্রস্তাব থিওডোর হার্জেলসহ অনেক ইহুদি মেনে নিয়েছিলেন।

১৯০৪ সালে আধুনিক জায়নিজমের প্রতিষ্ঠাতা থিওডোর হার্জেল মাত্র ৪৪ বছর বয়সে মারা যান। তার মৃত্যুতে জায়নিস্ট আন্দোলন নতুন মোড় নেয়।

পরবর্তীতে হার্জেলের প্রস্তাবিত উগান্ডা প্রকল্প কয়েকজনের প্রচেষ্টায় বাতিল করা হয়। এরপর জায়নিস্টদের মধ্যে ফিলিস্তিনেই আবাস স্থাপনের ইচ্ছা দৃঢ় হতে থাকে।

কিভাবে ফিলিস্তিনকেই ইহুদিরা বেঁছে নেয়?

ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবের পেছনে যাদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি সেই মানুষগুলোর মধ্যে অন্যতম ড. হায়্যিম ভাইৎসম্যান।

তিনি পেশায় ছিলেন একজন রসায়নবিদ। রুশ বংশোদ্ভূত ভাইৎসম্যান জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে পড়াশোনার পর রাশিয়া থেকে যুক্তরাজ্যে চলে যান।

সেসময় ভাইৎসম্যান জায়নিজমের প্রচারণায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের পর ভাইৎসম্যানকে দেশটির প্রথম রাষ্ট্রপতি করা হয়।

১৯০৬ সালে একবার ভাইৎসম্যান ও বেলফোরের মধ্যে সংক্ষিপ্ত কথোপকথন হয়। সেসময় বেলফোর ইহুদিদের বসবাসের জন্য উগান্ডায় একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।

ইতিহাস কথা কয়

জায়োনিস্ট ইহুদিদের ফিলিস্তিনে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সেসময় ওসমানীয় সাম্রাজ্যের কয়েকজন প্রশাসকও মুসলমানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ইহুদিদের পক্ষ নেয়।

তারা চাইতো ফিলিস্তিন ইহুদিদের হোক। উসমানীয় সাম্রাজ্যের তৎকালীন সামরিক প্রধান জামাল পাশা ১৯১৭ সালে বার্লিন সফরে সেখানকার ইহুদি কমিউনিটির সাথে দেখা করেন।

ইহুদিরা সে সময় উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তালাত পাশাকেও ফিলিস্তিনে ইহুদি বসতি স্থাপনে রাজি করানো হয়।

উসমানীয় সাম্রাজ্য এসময় ছিল বিপর্যস্ত। সুলতান আব্দুল হামিদ রহ. কে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকেই উসমানীয় সাম্রাজ্যের মৌলিক পতন শুরু হয়।

শেষ পর্যন্ত প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানীয়দের যুক্ত হয়ে হেরে যাওয়া এবং ১৯২৩ সালে খেলাফত ধ্বংস হওয়া যেন একই সুত্রে গাঁথা।

তথ্যসুত্র

রোর বাংলা মিডিয়া

Scroll to Top