ইহুদিদের বিরুদ্ধে জার্মান কেন?

ইহুদিদের বিরুদ্ধে জার্মান কেন – বহু আগ থেকেই জার্মানি ছিল সমৃদ্ধশীল একটি দেশ। তারা রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষর রেখেছে।

১৯২৩ সালে জার্মানের অর্থনীতিতে বিপর্যয় নেমে আসে, আজও তা বিশ্বের অর্থনীতিতে কালো অধ্যায়।

তখন এমন এক ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটে, যাকে আজও পৃথিবী স্বরণ করে।

কেউ তাকে ভালো বলে জানে আর কেউ তাকে খারাপ বলে জানে। তিনি হলেন এডলফ হিটলার। তার হতে নাৎসি বাহিনী প্রতিষ্ঠা পায়।

১৯৩৪ সালের জুন মাসে Les Annales পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে জার্মান লেখক Emil Ludwig Cohn বলেছিলেন,

হিটলার কোনো যুদ্ধে যাবে না। এমনকি সে কোনো যুদ্ধে জড়াতেও চায় না। কিন্তু আমরা তার উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিব। হয় এ বছর বা পরের বছর।

এ প্রসঙ্গে My Political Testament বইয়ে এডলফ হিটলার বলেন,

এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা যে, আমি বা জার্মানির কেউ ১৯৩৯ সালে যুদ্ধে জড়াতে চেয়েছি।

এর নেপথ্যে ছিল আন্তর্যাতিক ইহুদি সংগঠনগুলোর ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা। তারাই আমাদেরকে যুদ্ধ করতে বাধ্য করেছে।

ধ্বংসাত্মক প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আরেকটি যুদ্ধের কথা আমি কখনো কল্পনাও করি নি। হোক তা আমেরিকা বা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে।

সংগঠনগুলোর পরিচয়

ইহুদিদের এসব সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল তাদের অসংখ্য ব্যাংক, যা আজও বিশ্বে তাদের ইশারায় পরিচালিত হচ্ছে।

ইহুদিদের “আল জুদান” নামে কল্পিত একটি রাষ্ট্র ছিল। এটির কোনো সীমানা ছিল না। আর কোনো ভূমিও ছিল না।

তাদের সদস্যরা পৃথিবীর যেই অবধি ছড়িয়ে আছে, সেই অবধিই হলো এই রাষ্ট্রের সীমানা।

ইহুদিরা “কাহাল” নামে নতুন এক সমাজব্যবস্থার জন্ম দেয়।

পড়ুন: অ্যান্টি সেমিটিজম কি?

যা মেনে চলা ছিল সকল ইহুদিদের জন্য বাধ্যতামূলক। আধুনিক রাষ্ট্রের ন্যায় তাদেরও ছিল পার্লামেন্ট। সেখানে নিয়মিত অধিবেশন বসতো।

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ইহুদিদের প্রতিনিধিরা এই অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতো।

পরবর্তী বছর তাদের সেখানে আবার আমন্ত্রণ করা হবে, তা চলতি বছরে তাদের কাজের গুণাগুণ দেখে নির্ধারণ করা হতো।

তাদের পার্লামেন্টের নাম ছিল “সেনহাড্রিন”। পার্লামেন্টের পাশাপাশি এটা ছিল ইহুদিদের ধর্মীয় আদালত।

বিভিন্ন দেশে ইহুদিদের ত্রাসের সাম্রাজ্য

১৯২২ সালে পূর্ব ইউরোপে সোভিয়েত ইউনিয়ন রাষ্ট্রের সূচনা ঘটে। এটি ছিল ইহুদিদের কাহাল ব্যবস্থার অনুরূপ।

সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়ে ইহুদিদের ছিল বিস্তর পরিকল্পনা। কিন্তু সোভিয়েত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগেই জারের সাম্রাজ্যকালে ১৯০৫ সালে পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যায়।

ফলে রাশিয়ার সম্রাট নিকোলাস ইহুদিদের নাগরিত্ব বাতিল করে দেন। ফলে বিশাল একটি জনগোষ্ঠী উদ্বাস্তু হয়ে যায়।

সেই সময়ে জার্মানির ৫০% পত্রিকা ইহুদিদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাই পত্রিকায় কি প্রকাশ হবে আর কি বাদ যাবে, তা ইহুদিরাই ঠিক করতো।

রাশিয়ার এই ঘটনার পর জার্মান পত্রিকাগুলো করুণভাবে ইহুদিদের প্রতি অত্যাচারের কথা তুলে ধরা শুরু করে।

কিন্তু কেনই বা সম্রাট নাগরিত্ব বাতিল করলেন, তাদের দোষই বা কি, তা নিয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করলো না।

ফলে সাধারণ মানুষ মূল ঘটনা সম্পর্কে অজ্ঞ রয়ে গেল। তাদের নিকট যেটা উপস্থাপন করা হলো, সেটাই তারা হজম করে নিল।

এই জনগোষ্ঠীর জন্য জার্মানদের মায়া আর ভালোবাসা তখন গদগদ করতে লাগলো।

জনগণের আকুল আবেদনে জার্মান সম্রাট অভ্যর্থনা জানিয়ে ইহুদিদের আশ্রয় দিল।

এরপর আস্তে আস্তে ইহুদিরা এক এক করে জার্মানকে নিয়ে পরিকল্পনা করে কবজা করা শুরু করলো।

আশ্রয় লাভের পর থেকে ইহুদিরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে সুকৌশলে প্রবেশ করা শুরু করে।

জনসংখ্যার ২-৩% হয়েও ইহুদিরা একটা সময় দেশের হর্তাকর্তা বনে যায়। ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে ইহুদিরা মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ পেত।

যা দিয়ে যে কোনো প্রতিষ্ঠানকে তারা কিনে ফেলতো। একটা সময় জার্মানের অর্থনৈতিক অধঃপতন শুরু হয়। যা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ পায় ১৯২৩ সালে। এটার মাধ্যমেই বুঝা যায়, ইহুদিদের বিরুদ্ধে জার্মান কেন এত রাগান্নিত।

হিটলারের উত্থান

১৯২২ সালে তাদের বাজারে ১৬৩ মার্ক (জার্মানীর মুদ্রা) দিয়ে একটি পাউরুটি পাওয়া যেত।

১৯২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তার মূল্য হয় ১.৫ মিলিয়ন মার্ক এবং নভেম্বর শেষ হতে না হতেই তা বেড়ে দাঁড়ায় দুই বিলিয়ন মার্কে।

(বর্তমানে জার্মানির মুদ্রার নাম ইউরো)

দ্রব্যমূল্যের এমন উর্দ্ধগতির দরুন জনজীবনে ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ নেমে আসে। ঋণের দায় মেটাতে না পেরে প্রচুর প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যায়।

বেকার ও গৃহহীন হয়ে পড়ে প্রায় ৬০ লাখেরও অধিক মানুষ। ৮ নভেম্বর, ১৯২৩ হিটলার প্রায় দুই হাজার সশস্ত্র সৈনিক নিয়ে মিউনিখ আক্রমণ করে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা চালায়।

কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তাকে মিউনিখ মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের সাথে বন্দুকযুদ্ধের মুখোমুখি হতে হয়। এই যুদ্ধ দুই দিন ধরে চলে।

এতে তার বহু সৈনিক নিহত এবং অনেককে গ্রেফতার করা হয়। হিটলার জীবিত পালালেও ১১ নভেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয়।

২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৪ সালে হিটলারকে বিচারের মুখোমুখি করা হলে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে তাকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই পুরো ঘটনা ইতিহাসে Beer Hall Putsch নামে পরিচিত। এই ঘটনার পর পুরো জার্মানিতে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।

২০ ডিসেম্বর, ১৯২৪ সালে হিটলার জেল থেকে মুক্তি পায়। ১৯৩৩ সালে তার রাজনৈতিক দল নাৎসি পার্টি ক্ষমতায় এসে প্রথমেই পুরোনো অর্থব্যবস্থাকে বাতিল ঘোষণা এবং নতুন মুদ্রা ছাপাতে শুরু করে।

যে ব্যাংকারদের হাতে এতদিন দেশ জিম্মি ছিল, তাদের সে দেশছাড়া করে। রাতারাতি পুরো দেশের চিত্র পালটে যায়।

পুরো বেকার সমাজকে সে একাই কাজে ফিরিয়ে আনে এবং সবার জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে শুরু করে। মাত্র কয়েক বছরের মাথায় তারা হয়ে উঠে সমৃদ্ধশীল জাতি।

তথ্যসুত্র

সিক্রেট অব জায়োনিজম, পৃষ্ঠা ৩৮-৪৫

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কেন হয়েছিল

ইহুদিদের ষড়যন্ত্রে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তারা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলেছিল। ফলস্বরুপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কবে হয়েছিল

১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর শুরু হয়। ২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫ সালে শেষ হয়

Scroll to Top