ইহুদিদের তথ্য বাণিজ্য

শুধুমাত্র তথ্য বাণিজ্য করে যে অনেক মুনাফা হাতানো সম্ভব, তা শুধুমাত্র ইহুদিদের মাথাতেই প্রথম এসেছিল। তাদের পূর্বে কোনো জাতি এমনটা করার কল্পনাও করে নি।

ইহুদিরা তথ্য বাণিজ্য করে বিভিন্ন জায়গার খবর আগাম পেয়ে যেত। আর তারা সেটি সম্পূর্ণ কাজে লাগাতো মুনাফা লাভের জন্য।

ইহুদিদের নিজস্ব একটি পার্লামেন্ট ছিল। যাকে সেনহার্ড্রিন নামে ডাকা হয়।

পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের যেখানেই ইহুদিরা বসবাস করুক না কেন, তাদেরকে অবশ্যই সেনহার্ড্রিনের নিয়ম-নীতি মেনে চলতে হয়।

প্রতি বছর নির্দিষ্ট একটি সময় গোপন কোনো স্থানে সেনহার্ড্রিনের বার্ষিক সভা হতো। তখন বিভিন্ন রাষ্ট্রে থাকা উচ্চপদস্থ ইহুদিরা সেখানে উপস্থিত হতো।

তাদের সকলের নিকটই তাদের বসবাসকৃত রাষ্ট্রের বিভিন্ন গোপন তথ্য থাকতো। এগুলো এক এক করে তারা সেখানে উপস্থাপন করতো।

এভাবেই ফ্রান্সের খবর ইংল্যান্ডের কাছে আগে আগে ফাঁস হয়ে যেত। আবার জার্মানির খবর অস্ট্রিয়ার কাছে আগে আগে ফাঁস হয়ে যেত।

ইউরোপিয়ান সরকার যেই আইনই করুক না কেন, ইহুদিরা সেনহার্ড্রিনের মাধ্যমে আগে থেকেই সেটি জেনে ফেলতো।

ইহুদিদের এমন তথ্য ফাঁস করার কারণে অনেকবারই তাদেরকে বিভিন্ন দেশ থেকে বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

তথ্য বিকৃতির মাধ্যমে সম্পদ লুণ্ঠন

ইহুদিরা জাতিগতভাবেই ভীরু প্রকৃতির। কিন্তু সম্পদ অর্জনে তারা সিদ্ধহস্ত। নেপোলিয়ানের সময় এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল, যার দ্বারা তাদের দক্ষতা বুঝা যায়।

নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে ১৮১৪ খৃস্টাব্দে ইউরোপের সাতটি দেশ এতত্রিত হয়ে যুদ্ধ করে। যুদ্ধে নেপোলিয়ন হেরে যায়।

তখন নেপোলিয়নকে এলবা দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয়। এলবা দ্বীপে নির্বাসন দেওয়ার পর কেউ ধারণা করতে পারে নি, সে আবার ইউরোপে ফিরে আসবে।

নেপোলিয়ন তখন আবার শক্তিসংগ্রহ করে পূনরায় ইংল্যান্ড আক্রমণ করে ১৮১৫ সালে। এটিকে ওয়াটারলু যুদ্ধ বলা হয়।

এবারও নেপোলিয়ন পরাজিত হয়। কিন্তু মাঝখান দিয়ে আশ্চর্যজনকভাবে ইহুদিরা বড় একটা ব্যবসা করে সম্পদ হাতিয়ে নেয়।

বিখ্যাত ইহুদি পরিবার রথচাইল্ড পরিবারের একজন হলো নাথান রথচাইল্ড। এই ওয়াটারলু যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় সে ইংল্যান্ডের বাহিনীতে বিনিয়োগ করে।

দেখতে থাকে, কারা জিতে! যখন সে দেখতে পেল, নেপোলিয়ন আস্তে আস্তে পরাজয়ের দিকে যাচ্ছে তখন সে দ্রুত ব্রাসেলসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।

পথে কাউকেই সে যুদ্ধের মূল খবর জানায় না। ব্রাসেলস থেকে অতি উচ্চমূল্যে একটি ঘোড়ার গাড়ি ভাড়া করে ওস্টেন্ডে পৌঁছায়।

সেখান থেকে ইংল্যান্ড হলো মাত্র ২০ কি.মি.। সমুদ্রে তখন ঝড় হচ্ছিল। কোনো জাহাজই সেটিকে যাচ্ছিল না।

নাথান তখন ২ হাজার ফ্রাঙ্ক ভাড়া দিয়ে একটা জাহাজকে রাজি করালো।

অবশেষে সে অর্ধমৃত অবস্থায় ইংল্যান্ডের উপকূলে পৌঁছলো। সে সময় এত উন্নতি প্রযুক্তি ছিল না, তাই মানুষ জানতো না, যুদ্ধের ফলাফল কি হয়েছে।

২০ জুন ১৮১৫ তারিখে নাথান রথচাইল্ড নিজের অফিসে হাজির হয়। সে তখন ইংল্যান্ড যুদ্ধে হেরেছে এমন বিষয়ক একটি কলাম লিখে পত্রিকায়।

জনগণ তখন পানির দামে শেয়ার বিক্রি করতে থাকে। ফ্রান্স ইংল্যান্ড আক্রমণ করবে ভেবে সবাই যা পারে বিক্রি করতে থাকে।

নাথান রথচাইল্ড তখন সকল শেয়ার কিনে নেন। দুইদিন পর ১ কোটি ডলার সমমূল্যের শেয়ার সিকিউরিটি ক্রয় করে।

এর কিছুক্ষণ পরই ইংল্যান্ডের বাহিনী বিজয়বেশে ইংল্যান্ডে প্রবেশ  করে। কিন্তু ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে।

জনগণের সিংহভাগ সম্পদ চলে গেছে নাথান রথচাইল্ডের হাতে।

এমন আরো বহু উদাহরণ রয়েছে ইহুদিদের। বলশেভিক ও ফরাসি বিপ্লবের সময়েও তারা এমন তথ্য বাণিজ্য করে।

তথ্যসুত্র

সিক্রেট অব জায়োনিজম, পৃষ্ঠা ৭৮-৮৭

Scroll to Top