স্বাধীনতার উল্টো পিঠ

স্বাধীনতার উল্টো পিঠ – স্বাধীনতা শব্দের মধ্যে মিশে আছে মুক্তি, ত্যাগ, সাহসিকতার পরিচয়। স্বাধীনতা তো হাজার বছরের প্রাপ্তি যেন।

পৃথিবীব্যাপী যখন পরাধীনতার জয়-জয়কার ছিল, আল্লাহ তখন নবী পাঠিয়ে আমাদেরকে মাখলুকের গোলামী থেকে মুক্তি দিলেন। প্রথম স্বাধীনতা পেলাম আমরা।

আবিসিনিয়ার বাদশাহ নবীজির সাহাবীদেরকে জিজ্ঞাসা করেছিল, তোমরা কি বিশ্বাস করো? তখন হযরত জাফর বিন আবি তালিব রা. বলেছিলেন, আমাদেরকে মানুষের গোলামী না করে আল্লাহর গোলামী করতে আদেশ করা হয়েছে।

নবীজির পর সাহাবীদের যুগে, তাবেয়ীদের যুগে এই পৃথিবী ছিল উম্মাহর স্বর্ণযুগ।

ইসলামী বিশ্বের মানচিত্র তখন পৃথিবীর এক কোণ থেকে অপর কোণ পর্যন্ত ছিল।

উম্মাহ ছিল তখন স্বাধীন। আল্লাহ ব্যতিত কোনো কারো সামনে মাথা নত করতো না তারা।

আল্লাহ বাতলে দেওয়া শাসনব্যবস্থার বাহিরে অন্য কোনো শাসনব্যবস্থা গ্রহণ করতো না।

কথায় আছে, সুখে থাকার পর দুঃখ আসে। মুসলমানদের কপালেও তা হলো।

মুসলমানদের ক্ষমতাশীনরা উক্ত সুখ ও ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী মনে করে তারা স্রোতে গাঁ ভাসিয়ে দিল।

কাফেরদের সাথে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য জোট গঠন করলো। তাদের সাহায্য নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলো। এর ফলে আস্তে আস্তে মুসলমানদের পরাধীনতা কাছে আসতে থাকে।

উনবিংশ শতাব্দী, বিংশ শতাব্দী সময়টাতে মুসলমানদের পরাজয় বাড়তে থাকে।

তাদের ক্ষমতা কমতে থাকে। অন্যদিকে কুফরিশক্তি এ সময়টাতে পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন চালিয়ে খিলাফত ধ্বংস করে।

এরপর জাতীয়তাবাদের অথর্ব বুলি আমাদের মুখে তুলে দেয়। গণতন্ত্রের মতো একটি বিকৃত রাজনীতি ও সমাজনীতি আমাদের আদর্শ বানিয়ে দেওয়া হয়।

আল্লাহ যথার্থই বলেছিলেন। যখন তোমরা জিহাদ ছেড়ে দিবে, আল্লাহর আনুগত্য ও তাকে ভয় করা ছেড়ে দিবে তখন তোমাদের অন্তরে ‘ওয়াহান’ ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।

উম্মাহ আজ স্বাধীনতা দিবসের মাধ্যমে, ঘটে যাওয়া কোনো যুদ্ধের মাধ্যমে নিজেদের স্বাধীন জাতি মনে করে।

অথচ ‍মুসলমানদের বর্তমান অর্থনীতি, সমরনীতি, রাজনীতি, বিচারব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে কাফেরদের অনুসরণে।

এমন স্বাধীনতা ততক্ষণ পর্যন্তই বলবৎ থাকবে, যতক্ষণ পশ্চিমা প্রভূদের আমরা সন্তুষ্ট রাখতে পারবো। আমরা আল্লাহ ভীতি বাদ দিয়ে মাখলুক ভীতি নিয়ে বেড়ে উঠছি।

আমাদের উত্তরণের পথে অগ্রসর হওয়া দরকার। আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর দেওয়া সমাজব্যবস্থা বাদে অন্য কোনো ব্যবস্থা কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে না।

Scroll to Top