জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজনীতির কালো থাবা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় – সেদিন এক সেলুনে গেলাম চুল কাঁটতে। খুব ভীর দোকানে। অনেকক্ষণ বসে থাকতে হবে ভেবে মনে মনে বিরক্ত হলাম।

কি করা যায় ভাবতেই চোখ পড়লো পত্রিকার দিকে। ইদানিং নিউজ পেপার তেমন একটা পড়া হয় না। কেমন যেন অনাগ্রহবোধ করি দেশের প্রচলিত রাজনীতির উপর।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

তারপরও সময় কাঁটানোর জন্য পত্রিকাটা হাতে নিলাম। দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা। নাম প্রথম আলো। সেই চিরচরিত খবর।

রাজনীতি, গুম, খুন ও নেতাদের গলা-ফাঁটানো বিবৃতি। অধিকারের নামে কেউ সর্বস্ব লুট করছে। কেউ বা খানিকটা আগ বেড়ে নির্যাতনকে বেছে নিয়েছে।

শেষ পৃষ্ঠায় দেখলাম গাঁ শিউরে উঠার মতো একটা খবর। শিরোনাম হলো,

শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে, আয়েশে থাকেন নেতারা

নিউজটা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের। দেশের স্বনামধন্য অন্যতম একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একটা ইন্টারন্যাশনাল ওয়েবসাইটের তথ্যমতে,

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংক বাংলাদেশের মধ্যে ১২ তম। আর বিশ্বের মধ্যে ৬২৪৯ তম। বাহ্, অসাধারণ র‍্যাংকিং। অথচ বিশ্বের অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় – এখন মূল নিউজটা বলা যাক,

সেখানে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল রয়েছে কয়েকটা। প্রতিটাকেই স্টুডেন্টদের বসবাস। কিন্তু এর মধ্যে রাজনীতির নাম ভেঙ্গে কিছু অপদার্থ স্টুডেন্ট হোস্টেলের রুম দখল করে তাতে রাজনৈতিক সংগঠনের কাজ করে। তারা সেই রুমগুলোকে বিলাসবহুল বাড়ির মতো ব্যবহার করে।

অথচ সাধারণ শিক্ষার্থীরা থাকার জায়গা পায় না। কেউ বা অসাস্থ্যকর পরিবেশে থেকে ক্লাস করছে। মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় আবাসন সুবিধা পাচ্ছে না।

যেদিকে তাকাও, সেদিকেই ছাত্রলীগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় – শিক্ষার্থীরা বলছেন, হলে আসন পাওয়ার ক্ষেত্রে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয়, শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক পরিচয়কে বিবেচনায় নেওয়া হয়।

৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘১টি কক্ষে ১০-১২ জন থাকাটা কষ্টের। আশা করছি, দ্রুত সিট পেয়ে যাব। বড় ভাইদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হলে সিট পাওয়াটা সহজ হয়।’

রাজনীতি এবং পড়ালেখা

গনতন্ত্র এই দেশের কোনো কল্যান বয়ে এনেছে নাকি আমার জানা নেই। এটা একটা কাঁটার মতো দেশের প্রতিটি সেক্টরে বসে আছে।

কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গন হবে রাজনীতিমুক্ত। অথচ তারা রাজনীতি করে নিজেদের জীবনকেও শেষ করছে। অন্যান্য মানুষের জীবনকেও দুর্বিসহ করে তুলছে।

আমরা বর্তমানে চেতনায় বিশ্বাসী। একটু পান থেকে চুন খসলেই মুষ্টিযুদ্ধ নিয়ে লাফালাফি করি। আমাদের দৌড় সেই যুদ্ধ পর্যন্তই।

অথচ আমরা যে মুসলমান, এই পরিচয় প্রকাশ করি না। আমরা আজ এতটাই অসহায় যে, জাতীয়তাবাদের চক্করে পড়ে সারাবিশ্বের মুসলমানকে এক দেহ বলে ভাবতেও বিব্রতবোধ করি।

কেন এমন হয়? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি শিক্ষার্থীরা শিক্ষা না পেয়ে রাজনীতির চক্করে পড়ে তাহলে তাদের থেকে কি আসা করা যায়

আবার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য আবার বলেছিল, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় নাকি চা-সিঙ্গারা ও চপের জন্য বিখ্যাত। পড়ালেখার জন্য নয়।

আমাদের দেশের শিক্ষামন্ত্রনালয়ে এমন কিছু রবোট বসে থাকে, যারা অন্যের তাবেদারী করা ছাড়া আর কিছুই পারে না।

তাদের ঈমান এতটাই দুর্বল যে, তারা অন্যের সামনে মুসলিম পরিচয় না দিয়ে বাঙ্গালী পরিচয় দেয়।

বাঙ্গালী কি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে? তোমার বাঙ্গালীর কি কোনো নবী আছে? অথচ আল্লাহ এত সুন্দর ধর্ম ইসলাম ধর্মের মাধ্যমে তোমাদের সম্মানিত করেছেন,

অথচ তুমি অন্যের লেজ ধরে ঘুরতে পছন্দ করো? তোমার মুসলিম পরিচয় দিতে আত্মসম্মানে বাধে? তুমি লজ্জাবোধ করো মুসলিম বলতে?

তুমি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রে মুসলমানদের উপরে আঘাত হানলে প্রতিবাদ করতে পার না? কাপুরুষ তুমি। তোমাকে শত ধিক।

আমি জানি, তুমি শিক্ষাগ্রহন করবে না। আল্লাহর তোমার মতো অপদার্থের কখনো প্রয়োজন নেই।

রাজনীতি কারা করবে?

পৃথিবীর চিরয়িত নিয়ম হলো, যোগ্য এবং প্রবীন ব্যক্তিরাই অগ্রাধিকার পায়। শিক্ষার্থীরা হলো শিশুর মতো। তাদের নিকট ভালো-মন্দের পার্থক্য নেই।

তাদেরকে রাজনীতিতে না এনে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করার চেষ্টা করুন। দেখবেন, তারাই বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিবে।

আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই, যেখানে থাকবে না কোনো অশ্লীলতা। থাকবে না কোনো বেহায়াপনা। থাকবে না কোনো বিদেশী তাবেদার গোষ্ঠী।

ধর্মীয়ভাবে আমরা মুসলিম। আমাদের বাপ দাদা মুসলিম। আমাদের পরিচয়, আমরা মুসলমান। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে রয়েছে আমাদের ভাই।

আমরা একদেহের মতো। কেউ যদি কোথাও আক্রান্ত হয়, আমরা গর্জে উঠবো। এতেই আমরা উভয় জাহানে লাভবান হবো।

আরো পড়ুন

হিন্দুত্ববাদের আযান চুলকানি

নবজাতকের আর্তনাদ

Abdur Rahman Al Hasan
Scroll to Top