গণতন্ত্রের চোর পুলিশ খেলা

গণতন্ত্রের চোর পুলিশ খেলা – ১৮শ শতকের শেষের দিকে বিপর্যস্ত পৃথিবীতে শান্তির আলো দেখতে মানুষ সমাজ পরিবর্তনের চেষ্টা করে। সমাজের সাথে তো রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থা জড়িত।

তাই তখন শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের দিকেই ফোকাস দেয়া হয় বেশি। রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র মানুষকে শোষণের শেষ প্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল।

রাজার ছেলে রাজা হবে, বাধা দেয়ার কে আছে? এমন স্লোগান ছিল সে সময়কার সরকারের মুখে। একটা সময় বিদ্রোহ করে সমাজতন্ত্র কায়েম হয়।

কিন্তু সমাজতন্ত্রকে দেখতে যতটা দুধে ধোয়া কলাভাত মনে হোক না কেন, সময়ে সময়ে তার আসল রুপ বেরিয়ে আসে জনসম্মুখে।

তখন মানুষ আবার অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন, সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। এত এত সমস্যার মধ্যে কি তাহলে আদৌ কোনো শাসনব্যবস্থা উত্তম বলে বিবেচিত হয় না?

কোন শাসনব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ

প্রশ্নটা করলে অধিকাংশ মানুষ তেমন উত্তর খুঁজে পায় না। কারণ তারা অন্য কোনো শাসনব্যবস্থা প্রত্যক্ষ করে নি। কিন্তু বইয়ের পাতায় পাতায় বিগত শাসনব্যবস্থার ধারা বর্ণিত হয়েছে অসংখ্য গ্রন্থে।

মানুষ শান্তি চায়। আর শান্তি সকলের জন্য একরকম নয়। কেউ সাগরপাড়ে ঘুরতে পছন্দ করে আবার কেউ রহস্যের নেশায় গহীন জঙ্গলে ঘুরতে পছন্দ করে।

কিন্তু যত যা কিছুই করুক না কেন, এসকল জিনিষকে এক সুতোয় বাধার মতো একমাত্র শাসনব্যবস্থা হলো খেলাফাত।

গণতন্ত্রে একটা মজাদার সংলাপ পড়ুন (বুঝমানরা ঠিকই বুঝবে)

কথাটা শুনে অনেকে ভাববে, এসব তো ধর্মের কথা। এসব বলেই বা লাভ কি? খেলাফাত ১৯২৩ সালে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেটা বাতিল। সেটা পরিত্যাজ্য।

কিন্তু এখানেই একটা “কিন্তু” চলে আসে।

গনতন্ত্রের মিথ্যা ধোঁকা – গণতন্ত্রের চোর পুলিশ

আমরা মাঝেমধ্যে তৃপ্তির ঢেকুর তুলি এই বলে যে, আমার ভোট ও তো গণনা করা হয়।

আমি ভোট না দিলে হয়তো সরকার হেরে যেত।

আমার ভোটেই সে জিতেছে। এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত এবং অমূলক।

বাস্তবে আপনার ভোটের মাধ্যমে সরকারের ক্ষমতায় আসা বা না আসার সম্ভাবনা মাত্র ০.০০০০০০১%!

অর্থাৎ আপনার ভোটের কোনো দামই নেই এখানে। শূন্য এর পরে দশমিক দিয়ে যত সংখ্যাই থাকুক না কেন, গণিতের ভাষায় তার কোনো মূল্য নেই।

একটা জিনিষ খেয়াল করেছেন কি? আপনি যাকে ভোট দিচ্ছেন সে ৫/১০ বছর পর ক্ষমতা ছেড়ে দিচ্ছে। নতুন কেউ তখন ক্ষমতায় আসছে।

এর মানে তো হলো তাকে অবিশ্বাস করায় জনগণ তাকে ভোট দেয় নি। তাই সে হেরে গেল। সে আর ক্ষমতায় আসলো না।

গণতন্ত্রের জনক কে খানিকটা অতীত পড়ুন

এ ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় আছে, যেটা কখনো গণতন্ত্রের মাধ্যমে সুষ্ঠভাবে পরিচালনা সম্ভব নয়। গণতন্ত্র কখনোই জনগণের স্বার্থের শাসন ছিল না।

গণতন্ত্র তো নিচক একটি দলের শাসন এক গোষ্ঠী ব্যক্তিদের নিকট গোটা দেশকে জিম্মি করার শাসন।

আপনি গণতান্ত্রিক দেশে যতই ফ্রিডম ফ্রিডম বলে গলা ভাঙ্গেন, আপনি বাস্তবিক অর্থে তার এক তৃতীয়াংশও পান না।

গণতান্ত্রিক দেশে সরকারের হস্তক্ষেপ সবখানে থাকে। শিক্ষাব্যবস্থা, আইনব্যবস্থা, নীতিব্যবস্থা, সমাজব্যবস্থাসহ সবখানেই জনগণ সরকারের নিকট জিম্মি।

সরকারের ইশারায় ব্যাংক টাকা দিতে বাধ্য। সরকারের সহায়তায় টাকা পাচার হয় কিন্তু কোর্ট কোনো ব্যবস্থা নেয় না।

সরকারের হস্তক্ষেপে জনগণের চাহিদা মোতাবেক শিক্ষানীতি ও সিলেবাস নেই।

তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়, কিছু ব্যক্তিবর্গের নির্বাচিত একটা সিলেবাস। যার অনেক কিছুই ধর্ম ও স্বাধীনতার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ।

গণতন্ত্র কখনো দেশের জন্য শান্তি আনবে না। কারণ, যারাই গণতন্ত্রের নামে কাজ করে তারাই একটা বৃহৎ স্বার্থ নিয়ে কাজ করে।

গণতান্ত্রিক নিয়ম ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে হয়তো খুব ভালো ফল দিবে। কারণ, সেখানে একজন ব্যক্তির মতামতের দাম অনেক বেশি।

কিন্তু দেশের ১০ কোটির উপরে মানুষের মতামতের ভিত্তিতে যেই গণতান্ত্রিক ধারায় নির্বাচন প্রক্রিয়া হয় তাতে আপনার মতামত গ্রহণের সম্ভাবনা ০.০০০০০০১%।

গণতন্ত্রের চোর পুলিশ

খেলাফত শাসনব্যবস্থা – গণতন্ত্রের চোর পুলিশ

আমরা ইতিহাস সঠিকভাবে পাঠ না করায় খেলাফতকে রাজতন্ত্রের সাথে মিশ্রিত করে ফেলি বিধায় আমরা খেলাফতের সঠিক মর্ম উদ্ধার করতে পারি না।

খেলাফতের নিয়ম-নীতি হলো, একজন ব্যক্তিকে দেশের গণমান্য ও বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা শাসনের জন্য নির্বাচিত করবে।

উক্ত ব্যক্তি আজিবনের জন্য (ক্ষেত্র বিশেষে নির্দিষ্ট কার্যকলাপ না করা পর্যন্ত) উক্ত কাজের জন্য নির্বাচিত হবে।

আর এই ব্যক্তির বিচারব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা সহ অনান্য বিষয়ে সম্পূর্ণ হস্তক্ষেপ থাকবে না।

তিনি বিচারক নির্ধারণ করবেন ঠিক কিন্তু বিচারকের সঠিক সিদ্ধান্ত যদি উক্ত খলিফার বিপক্ষেও যায়, তাহলেও খলিফাকে মাথা পেতে মেনে নিতে হবে।

একজন মুসলিম হয়ে কি আপনার অমুসলিম দেশে বসবাস করা উচিৎ হবে? পড়ুন

খলিফাকে কুরআন-সুন্নাহর নীতিমালা অনুযায়ী ফায়সালা করতে হবে। আর উক্ত ব্যক্তি অন্য কোনো ধর্ম বা শিক্ষায় সম্পূর্ণ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

তিনি শুধুমাত্র দায়িত্বশীলদের ডেকে উক্ত বিষয়টি মতামতের ভিত্তিতে পরিবর্তন করতে বলতে পারেন। আর খেলাফতে কখনোই সকলের সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য হয় না।

কারণ সকল মানুষকে আল্লাহ একরকম মেধা দেয় নি। আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারি,

হযরত আবু বকর হযরত উমর হযরত উসমান ও হযরত আলী রা. এর জীবনীতে।

আজও পৃথিবী একজন খলিফার ছায়াতলে আশ্রয় চায়। একটা ন্যায়নিষ্ঠ সমাজ চায়। একটা সুন্দর ‍পৃথিবী চায়। আল্লাহ হয়তো অচিরেই আমাদের চাওয়া পূর্ণ করবেন।

তথ্যসুত্র হিসেবে পড়তে পারেন

বিয়ন্ড ডেমোক্রেসি। লেখক: কারেল বেকম্যান ও ফ্রাঙ্ক কারস্টেন। ফাউন্টেন পাবলিকেশন

শিক্ষক হত্যা করা আমাদের কি বার্তা দেয়? পড়ুন

গাজ্জার জন্য অনুদান

৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে তুফানুল আকসা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জায় অসংখ্য মানুষ আহত ও শহীদ হয়েছে। বহু মানুষ নিজেদের ঘর-বাড়ী হারিয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে গাজ্জার ৯৮% মানুষ অনাহারে জীবন-যাপন করছে। গাজ্জার মানুষের এই দুঃসময়ে আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে কে দাঁড়াবে?

আর-রিহলাহ ফাউন্ডেশন তুফানুল আকসা যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জার জন্য ডোনেশন সংগ্রহ করে আসছে। এই মহান কাজে আপনিও আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।

অনুদান দিন

Scroll to Top