কুরাইশদের নবীজিকে হত্যার ষড়যন্ত্র

কুরাইশদের নবীজিকে হত্যার ষড়যন্ত্র – কুরাইশরা নবীজির প্রতি অসহ্য হয়ে তার অভিবাবক আবু তালিবের নিকট আসে। তাকে তখন কুরাইশরা বলে,

হে আবু তালিব! আপনি আমাদের মধ্যে সম্মানিত। আপনার ভাতিজা আমাদের পূর্বপুরুষ ও দেব-দেবীদের গালি-গালাজ করে।

আমরা এটা সহ্য করতে পারবো না। হয় আপনি তাকে বাঁধা প্রদান করুন অথবা তাকে বুঝান। অন্যথায় আপনাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক খারাপ হবে। যার দরূন প্রাণহানি ঘটতে পারে।

আবু তালিব তখন নবীজি সা. কে বললেন, ভাতিজা! গোত্রের লোকেরা আমার কাছে এসে তোমার ব্যাপারে অভিযোগ করে।

তুমি আমার প্রতি এবং তোমার প্রতি এমন কিছু চাপিয়ে দিও না, যার দরূন আমরা এর ভার বহন করতে অক্ষম হয়ে পড়বো।

এ কথা শুনে নবীজি বুঝতে পারলেন, তার চাচার সাহায্যও আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে। তখন নবীজি সা. তার চাচাকে বললেন,

যদি আমার এক হাতে সূর্য এবং অন্য হাতে চাঁদ এনে দেওয়া হয় তবুও আমি এই দাওয়াতি কার্যক্রম ছেড়ে দিতে পারবো না।

এই কাজ করতে গিয়ে হয় আমি সফল হবো অথবা এক কাজ করতে গিয়ে আমি নিঃশেষ হয়ে যাব। এ কথা বলে নবীজি আবেগে কেঁদে ফেললেন।

চাচা আবু তালিব তখন নবী মুহাম্মাদ সা. কে বললেন, তুমি যা চাও তা করো। আল্লাহর কসম! কোনো অবস্থাতেই আমি তোমাকে ত্যাগ করবো না।

কুরাইশদের পুনরায় আবু তালিবের নিকট আগমন

কুরাইশরা এত এত হুমকির পরেও যখন দেখলো আবু তালিব নবীজিকে আগলে রাখছেন তখন তারা বুঝতে পারলো, আবু তালিব নবীজিকে পরিত্যাগ করবে না।

তাই কুরাইশ নেতারা ওলীদ ইবনে ‍মুগিরার পুত্র আম্মারকে সাথে করে আবু তালিবের নিকট উপস্থিত হয়ে বললো,

হে আবু তালিব! এই ছেলেটি সবচেয়ে সুদর্শন। আপনি তাকে পুত্র হিসেবে গ্রহণ করুন। আর মুহাম্মাদকে আমাদের হাতে তুলে দিন।

আমরা তাকে হত্যা করবো। কারণ, সে আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে। আমাদের পুর্বপুরুষদের অপমান-অপদস্ত করেছে।

তখন আবু তালিব বললেন, নিজের পুত্রকে তোমরা আমার নিকট নিয়ে এসেছ। যাতে তাকে আমি বড় করি।

আর আমার পুত্রকে তোমাদের হাতে তুলে দিব। যাতে তোমরা হত্যা করতে পার।

আল্লাহর কসম! এটি হতে পারে না।

কুরাইশরা যখন দেখলো, আবু তালিবকে কোনোভাবেই রাজি করানো যাচ্ছে না এবং মুহাম্মাদকেও থামানো যাচ্ছে না,

তখন তাদের আক্রোশ আরো বেড়ে গেল।

তারা সে সময় নবীজি সা. কে হত্যার পরামর্শ করে।

কিন্তু এরপূর্বেই হযরত উমর রা. এর ইসলাম গ্রহণহামযা রা. এর ইসলাম গ্রহণ ইসলামের শক্তি আরো বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

এর ফলে দিনদিন কাফেরদের আক্রোশ বাড়তে থাকে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না।

তথ্যসুত্র

আর রাহীকুল মাখতুম, পৃষ্ঠা ১০৫-১০৭

Scroll to Top