আবেগি পোস্ট দিয়ে ক্ষতি করছি কেন – বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় মানুষদের বড় একটি অংশ সর্বদা আবেগে ভেসে বেড়ায়। তারা সাময়িক বিজয় দেখে আনন্দে ফেঁটে পড়ে। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।
গণতন্ত্রের নামে যারাই দেশে ইসলামী রাজনীতি করছে, তাদের অধিকাংশই আবেগী। তারা ভাবে, মিছিল, লোক জমায়েত, স্লোগান ও আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যেই হয়তো বিজয় আছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করলেও এটি কখনো কখনো আমাদের জীবনকে মারাত্মক কঠিন করে দেয়।
ফেসবুকে আবেগি পোস্ট দিয়ে ক্ষতি করছি আর আমরা ভাবি, বাতিলরা হয়তো আমাদের আন্দোলনের কারণে ভয় পেয়েছে বা বাতিলরা নিমিষেই দ্বন্দ্ব ভুলে ভালো হয়ে গেছে।
এছাড়াও দেশে বড় একটি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক কমিউনিটি আছে, যাদের চিন্তাধারা হলো টিকটকারদের মতো।
কিভাবে নিজের পোস্টে লাইক পাওয়া যায়, কিভাবে ভিডিওতে ভিউ পাওয়া যায়, সেই চিন্তা তারা লালন করে।
তারা বাস্তববাদী হতে শিখে না। তারা বাস্তবতা বুঝে কাজ করে না। কেউ বিপদে পড়লে ও বিপদ থেকে উদ্ধার হলে তারা মূল কাজ না করে শাখাগুলো নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত লাফালাফি করে।
আমাদের আবেগি পোস্ট দিয়ে ক্ষতি করছি মজলুমদের
মাসখানেক আগে বাংলাদেশের অন্যতম আলেম শায়েখ জসিম উদ্দিন রহমানী হাফিঃ কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন।
২০১৩ সালে তিনি জালিমের বন্দিশালায় যান। ১১ বছর পর তিনি কারাগার থেকে বের হন। মুক্ত বাসাতে শ্বাস নেন।
আমরা আবেগী তালিবুল ইলম ও আবেগী – হজুরে জনগণ এই সংবাদ পেয়ে যেন মাথা উল্টে গেল।
কে কার আগে আবেগি পোস্ট করবে, কে কার আগে ভিডিও বানাবে, এই ধান্দা শুরু করলো বড় একটি কমিউনিটি।
সোস্যাল মিডিয়াতে ট্রেন্ডিংয়ে চলে আসলো শায়েখ রহমানীর নাম। এমন আবেগ দেখে মিডিয়াও তা প্রচার করলো।
সরকার এটি নিজেদের জন্য রিস্ক মনে করলো। ফলস্বরূপ বন্দিশালা থেকে মুক্ত হওয়ার ২ সপ্তাহের মাথায় আবার বন্দী হলেন। আবার চার দেয়ালে আবদ্ধ হলেন।
মাসখানেক আগে এমন একটি ঘটনা ঘটার পরও মানুষের শিক্ষা হয় নি।
আবেগী হুজুগে ব্যক্তিরা ইস্যুর পেছনে ছুটতে ছুটতে অতীতকেই ভুলে গেছে।
২ মে ২০২৪ তারিখে শুনতে পাই, মাওলানা মামুনুল হক সাহেব কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। এটি খুবই আনন্দের বিষয়।
৩ বছর পর তাকে মুক্ত বাতাসে দেখে অবশ্যই ভালো লাগবে।
কিন্তু আবেগী বাঙালীর কারণে সব বাতিল হয়ে গেল। সরকার মুক্তি দিতেও ইতস্ততবোধ করছে।
যদিও ৩ তারিখে তিনি মুক্তি পেয়েছেন, তারপরও শায়েখ রহমানীর অবস্থার কথা ভুলে যাই নি। যদি তেমন পূনরাবৃত্তি হয় তাহলে …………।
এত জনপ্রিয়তা, মানুষের এত ভীর, ক্ষমতাশীলরা এমনতেই ভয়ে থাকে, যদি না জানি আবার কি হয়! প্রার্থনা করি, যেন রহমানী সাহেবের মতো আবার না হয়।
আমাদের সস্তা আবেগ, আমাদের ক্ষতির কারণ। আল্লাহ আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।