পারস্য বিজয়ের পর জনৈক শাহজাদা জাবালা ইবনে আইহাম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। ইয়ারমুকের যুদ্ধে সে রোমানদের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।

অবশেষে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মদীনায় আগমন করে। এটি ১৬ হিজরীর ঘটনা। হযরত ওমর রাঃ তাকে উপঢৌকন প্রদান করেন।

সে তখন মুসলমানদের একজন হয়ে যায়। কিন্তু তার স্বভাব পরিবর্তন হয় নি।

হজ্জের সময় জাবালা

একবার সে হজ্জ করার জন্য মক্কায় গমন করে। বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করার সময় তার ইহরামের কাপড় জনৈক ব্যাক্তির পা লেগে খুলে যায়।

ফলে জাবালা রাগান্নিত হয়ে তাকে স্বজোরে থাপ্পর মারে। এতে লোকটি মারাত্মকভাবে আহত হয়। তার নাকের হা্ড্ডি ভেঙ্গে যায়।

উক্ত লোকটি তখন ওমর রাঃ এর নিকট গিয়ে নালিশ প্রদান করে। তিনি তখন জাবালাকে ডেকে আনেন। তাকে জিজ্ঞাসা করেন যে,

কিভাবে সংগঠিত হলো ইয়ারমুকের দ্বিতীয় যুদ্ধ? পড়ুন

ঘটনা সত্যি নাকি? জাবালা স্বীকার করে নেয়। ওমর রাঃ তখন বলেন, তুমি তোমার অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছ। এখন তুমি সম্ভব হলে উক্ত ব্যক্তিকে খুশী করো। অথবা তাকে বদলা নেয়ার সুযোগ দাও।

জাবালা নিজের মর্যাদার কারণে ভেবেছিল, সে হয়তো সকল নিয়ম-কানুনের উর্ধ্বে। তাই সে এ কথা শুনে পুরো অবাক হয়ে যায়।

এরপর জাবালা ওমর রাঃ কে বলে, আমি হলাম একজন শাহজাদা। আর উক্ত লোকটি হলো একজন সাধারণ ব্যক্তি। আমরা কিভাবে পরষ্পর সমান হই?

জাবালা

ওমর রাঃ তাকে বললেন, ইসলামের দৃষ্টিতে তোমরা উভয়ই সমান। জাবালা তখন বলে,

যদি এমন হয় তাহলে আমি পূনরায় খৃষ্টান হয়ে যাব।

উমর রাঃ বললেন, তাহলে তোমাকে মুরতাদ হিসেবে হত্যা করে ফেলা হবে। জাবালা তখন বুঝতে পারে,

ওমর রাঃ তাকে ইনসাফ ব্যতিত ছাড়বেন না।

তাই সে পরদিন সকাল পর্যন্ত চিন্তা-ভাবনা করার সময় চায়। ওমর রাঃ তাকে সেই সুযোগ প্রদান করেন।

রাতের বেলায় জাবালা মদীনা থেকে দলবলসহ পলায়ন করে।

জাবালার শেষ পরিণতি

এরপর সে মদীনা থেকে বের হয়ে কনস্টান্টিনোপলে হিরাক্লিয়াসের নিকট যাত্রা করে। সেখানে গিয়ে খৃষ্টান হওয়ার ঘোষণা দেয়।

হিরাক্লিয়াস তাকে থাকার জন্য একটি জায়গির নির্ধারণ করে দেয়। সেখানে সে দিন কাঁটাতে লাগলো।

ইসলাম থেকে বের হয়ে আসায় তার মনে অনুশোচনা হয়।

কিন্তু ক্ষমতার মোহ তাকে অন্ধ করে ফেলে। হযরত ওমর রাঃ একবার হিরাক্লিয়াসের নিকট একজন দূত পাঠিয়েছিলেন।

উক্ত দূতকে তখন জাবালার নিকট নিয়ে যাওয়া হয়। সে তখন তাকে হাসসান বিন সাবেত রাঃ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন।

জিসিরের যুদ্ধ কবে সংগঠিত হয়, পড়ুন

দূত জাসসামা বিন মুসাহিক রাঃ জবাব দেন, তিনি তো বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। জাবালা তখন খানিকটা চুপ থেকে বললো, হায়! যদি আমি সেদিন পালিয়ে না যেতাম।

জাসসামা বিন মুসাহিক রাঃ তাকে পূনরায় ইসলাম গ্রহণ করতে বলে। কিন্তু ক্ষমতার মোহ তাকে অন্ধ করে ফেলে। তাই সে রাজী হয় নি।

এরপর সে হাসসান নি সাবেত রাঃ এর জন্য উপহার প্রেরণ করে।

নাস্তিকরা বলে, নবীজি মন্দভাষী ছিলেন। আসলেই কি তাই? পড়ুন

Abdur Rahman Al Hasan
Scroll to Top