হুদাইবিয়ার সন্ধি ও ওমর রা. এর অস্থিরতা

হুদাইবিয়ার সন্ধি ও ওমর – রাসূল সা. ওমরা করার ইচ্ছা পোষণ করেন তখন তিনি সাহাবাদেরকে নিয়ে মক্কা অভিমুখে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে হুদাইবিয়া নামক এলাকায় তারা যাত্রা বিরতি দেন।

সে সময় ওমর রা. কে রাসূল সা. ডেকে পাঠান। রাসূল সা. তাকে মক্কার কুরাইশ নেতাদের নিকট গিয়ে তাদের এখানে আসার উদ্দেশ্য ব্যক্ত করে আসতে বললেন।

তখন ওমর রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কুরাইশ নেতারা আমাকে হত্যা করতে পারে বলে আমি আশংকা করছি। কারণ, আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বনু আদি গোত্রের কেউ মক্কায় নেই।

তবে এক ব্যক্তি আছে, যিনি এই কাজটি করতে সক্ষম হবে। তিনি হলেন ওসমান ইবনে আফফান রা.। কারণ, মক্কায় তার পরিবার ও গোত্রের লোকজন আছে।

ওসমান রা. কে প্রেরণ

রাসূল সা. তখন হযরত ওসমান বিন আফফান রা. কে ডাকলেন। তিনি তখন মক্কার কুরাইশদের নিকট গিয়ে বললেন,

আমরা যুদ্ধ করতে আসি নি। আমরা শুধু কা’বা তাওয়াফ করতে এসেছি। কুরাইশরা প্রথমে মানতে রাজি হয় নি। কিন্তু এরপর তারা বেশ কিছু শর্তের ভিত্তিতে রাজী হলো।

এই শর্তগুলোর মধ্যে কিছু শর্ত এমন ছিল যে, যেগুলো বাহ্যিকভাবে মনে হচ্ছিল মুসলমানদের জন্য অপমানজনক। তাই সাহাবারা সন্ধিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন।

হযরত ওমর রা. এবং বিখ্যাত সাহাবী ও আওস গোত্রের নেতা উসায়েদ বিন হুদায়ের ও খাযরাজ গোত্রের নেতা সাদ বিন উবাদা রা. এই সন্ধির বিরোধিতা করলেন। – হুদাইবিয়ার সন্ধি ও ওমর

ওমর রা. এর বক্তব্য – হুদাইবিয়ার সন্ধি ও ওমর

হযরত ওমর রা. তখন রাসূল সা. এর নিকট গিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আল্লাহর রাসূল নন? নবীজি বললেন, হ্যাঁ।

ওমর রা. বললেন, আমরা কি মুসলিম নই? নবীজি বললেন, হ্যাঁ। আমরা মুসলিম।

ওমর রা. তখন আবারো বললেন, তাহলে তারা কি মুশরিক নয়? নবীজি বললেন, হ্যাঁ। তারা মুশরিক। তখন ওমর রা. বললেন, তাহলে আমরা কেন এমন অপমানজনক চুক্তি মেনে নিচ্ছি?

তখন আল্লাহর রাসূল সা. বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল। আর আমি আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করতে পারবো না।

তখন ওমর রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাদেরকে নিয়ে তাওয়াফ করার কথা বলেন নি? নবীজি তখন বললেন,

হ্যাঁ বলেছি। কিন্তু আমি কি বলেছি যে আমাদের এই বছরই তাওয়াফ করতে হবে? ওমর রা. বললেন, না। এরপর ওমর রা. আবু বকর রা. এর নিকট গিয়ে একই কথা বললেন,

তখন আবু বকর বললেন, ওমর! নবীজির কথা মেনে নাও। এতেই উপকার রয়েছে।

হুদাইবিয়ার সন্ধি ও ওমর রা. এর এমন কথোপকথন যদিও অতিরঞ্জিত মনে হয় কিন্তু এরপরই আল্লাহ এটিকে একটি বিজয় হিসেবে প্রকাশ করেন।

তথ্যসুত্র

জীবন ও কর্ম: ওমর রা.। পৃষ্ঠা ১০০-১০৪

আরো পড়ুন

হালিমার বাড়িতে নবীজির শৈশব কেমন ছিল

মহানবীর সিরিয়া সফর

গেম খেলা কি আমাদের উচিৎ

খাত্তাব বিন নুফায়েল কে ছিলেন

রোমে মুসলমানদের সাথে হিরাক্লিয়াসের বাহিনীর যুদ্ধ

মালিক বিন নুআইরা কেন বিদ্রোহ করেছিল

গাজ্জার জন্য অনুদান

৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে তুফানুল আকসা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জায় অসংখ্য মানুষ আহত ও শহীদ হয়েছে। বহু মানুষ নিজেদের ঘর-বাড়ী হারিয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে গাজ্জার ৯৮% মানুষ অনাহারে জীবন-যাপন করছে। গাজ্জার মানুষের এই দুঃসময়ে আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে কে দাঁড়াবে?

আর-রিহলাহ ফাউন্ডেশন তুফানুল আকসা যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জার জন্য ডোনেশন সংগ্রহ করে আসছে। এই মহান কাজে আপনিও আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।

অনুদান দিন

Scroll to Top