বুহাইব যুদ্ধ – জিসিরের যুদ্ধে পারসিকদের বিজয়ের কারণে তাদের সাহস বেড়ে গিয়েছিল। আর পরাজিত মুসলমানরা তখন লজ্জিত হয়ে পেরেশান হয়ে পড়লেন।

ওমর রাঃ তখন পারসিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য আরো দক্ষ একটি সেচ্ছাসেবক বাহিনী তৈরি করলেন। মুহুর্তের মধ্যে বাহিনী তৈরি হয়ে যায়।

ওমর রাঃ তখন তাদেরকে মুসান্না বিন হারিসা রাঃ এর সাহায্যে পাঠিয়ে দেন। এদিকে আরবের অন্যতম গোত্র বাজিলা গোত্রের সরদার আব্দুল্লাহ বাজালি রাঃ নিজের গোত্রের বাহিনী নিয়ে ইরাকে পৌছে যান।

পারসিকদের প্রতিক্রিয়া

পারস্যের সেনাপ্রধান রুস্তম মুসলমানদের এমন প্রস্তুতির কথা শুনে ভাবলো, এবারও তারা জয়লাভ করবে। তাই সে সেনাপতি মিহরানের অধীনে একদল সেনা দিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করে।

ফুরাত নদীর তীরে বুহাইব নামক স্থানে তারা একত্রিত হয়। মুসান্না বিন হারিসা রাঃ এবার আর নিজ থেকে নদী পার হন নি।

পারসিকদেরকে বললেন, নদী পার হয়ে আসতে। পারসিকরা তখন বিজয়ের নেশায় এই আবদার লুফে নেয়।

তারা তখন নির্বিঘ্নে নদী পার হয়ে অপরপাশে চলে আসে।

বুহাইব যুদ্ধ

মুসলমানদেরকে সারিবদ্ধভাবে মুসান্না বিন হারিসা রাঃ ময়দানে দাঁড় করালেন। তিনি বললেন, আমি তিনবার তাকবীর বলার পর তোমরা কাতাবন্দী হয়ে যাবে।

চতুর্থ তাকবীর বলার পর একযোগে তোমরা আক্রমণ করবে। এরমধ্যে পারসিকরা সারিবদ্ধভাবে অগ্রসর হচ্ছিল। তাদের যুদ্ধের নাকারা বাজানোর আওয়াজ অত্যন্ত উঁচু ছিল।

কিছু সময় পর মুসান্না রাঃ তিনবার তাকবীর দেন। মুসলমানরা সকলে হাতিয়ার নিয়ে প্রস্তুত হয়ে যান।

চতুর্থ তাকবীর বলার পূর্বে কিছু ব্যক্তি আক্রমণের জন্য অগ্রসর হতে থাকে।

তখন মুসান্না রাঃ তাদেরকে ডাক দিয়ে সাবধান করে দেন। এরপর তিনি চতুর্থ তাকবীর বলার সাথে সাথে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।

দুপক্ষই তুমুলভাবে যুদ্ধ করছিল। মুসলমানদের নিকট এবং পারসিকদের নিকট এটি ছিল অস্ত্বিত্বের লড়াইয়ের মতো।

যুদ্ধের ফলাফল

বুহাইবের যুদ্ধে পারসিকদের সেনাপতি মিহরান মারা যায়। ফলে পারসিকরা মনোবল হারিয়ে ফেলে।

অপরদিকে মুসলমানদের ডান ও বাম বাহু পারসিকদের উপর জোড়ালো আক্রমণ করে তাদেরকে পিছু হটিয়ে দেয়।

শেষ পর্যন্ত পারসিকদের নদী অতিক্রম করা ব্যতিত আর কোনো রাস্তা ছিল না।

তারা নদী পার হওয়ার আগেই মুসলমানদের একটি দল গিয়ে সাঁকোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

ফলে পারসিকরা দিগবিদিক পলায়ন করতে থাকে। এই যুদ্ধে মুসলমানদের বিষয় অর্জন হয়।

পারসিকদের প্রায় ১ লক্ষ সৈন্য নিহত হয় এই যুদ্ধে।

তথ্যসুত্র

মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস। খন্ড ৩। পৃষ্ঠা ১৪৪-১৪৬

নবীজি কি কোনো শিশুর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন? পড়ুন

হিজাব কি নারীর নিরাপত্তা দেয়? পড়ুন

গাজ্জার জন্য অনুদান

৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে তুফানুল আকসা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জায় অসংখ্য মানুষ আহত ও শহীদ হয়েছে। বহু মানুষ নিজেদের ঘর-বাড়ী হারিয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে গাজ্জার ৯৮% মানুষ অনাহারে জীবন-যাপন করছে। গাজ্জার মানুষের এই দুঃসময়ে আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে কে দাঁড়াবে?

আর-রিহলাহ ফাউন্ডেশন তুফানুল আকসা যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জার জন্য ডোনেশন সংগ্রহ করে আসছে। এই মহান কাজে আপনিও আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।

অনুদান দিন

Scroll to Top