সুইডেনে কোরআন পোড়ানো

সুইডেনে কোরআন পোড়ানো – পবিত্র মহান ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন চৌদ্দশত বছর পূর্বে নবীজি মুহাম্মাদ সা. এর উপর দীর্ঘ তেইশ বছরে নাজিল হয়।

মহান আল্লাহ তা’আলা বিধি-বিধান, পূর্বেরকার ঘটনা, উপদেশ ও ভীত প্রদর্শনসহ আরো বিভিন্ন বিষয়ে তাতে উল্লেখ করেছেন।

কুরআন এমন এক জীবন্ত কিতাব, যা এত বছর পরেও স্বীয়ক্ষেত্রে স্বকীয়মান। এর গুণগতমান এখনো অক্ষুন্ন। এর কোনো বিধান আজ পর্যন্ত ভুল প্রমাণিত হয় নি।

এই পৃথিবীকে কয়েকটি মহাদেশে ভাগ করা হয়। এসব মহাদেশগুলো বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের ব্যক্তিরা বসবাস করে।

কেউ বা ‍মুসলিম, কেউ বা খ্রিষ্টান, কেউ বা ইহুদী, কেউ বা প্যাগান।

প্রতিটা ধর্মকেই আমরা মুসলমানরা বিচ্যুত বলে বিশ্বাস করি। তবে একটা জিনিষ এক্ষেত্রে আমরা মাথায় রাখি যে, তারা বিচ্যুত হলেও তারাও মানুষ।

তাদেরকে তাই ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। তাদের সাথে কর্কশ ব্যবহার করা যাবে না।

মুসলমানদের জন্য তাদের সম্পত্তি বৈধও নয়।

কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের আদেশ দেয়া হয়েছে, তোমরা ঈমান আন।

তাহলে শান্তি পাবে উভয় জাহানে। তবে যদি তা না করো, তাহলে লেলিহান শিখা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।

এখানে একটা বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, আরো বেশ কিছু বিষয় এখানে লক্ষণীয়। কুরআনের সূরা কাফিরুনে বলা হচ্ছে,

তোমাদের ধর্ম তোমাদের আর আমাদের ধর্ম আমাদের।

তোমরা যার ইবাদত করো আমরা তার ইবাদত করি না। এই সূরার মাধ্যমে আল্লাহ বলে দিয়েছেন,

যদিও সকলের উপর ঈমান আনা ফরজ, এরপরও কাউকে চাপপ্রয়োগ করা যাবে না।

নবীজি সা. ও সাহাবারা কখনোই কাউকে চাপপ্রয়োগ করে মুসলিম করেন নি। তারা হৃদ্যতার মাধ্যমে দাওয়াত দিয়েছেন।

ক্ষেত্রবিশেষে জিহাদ করেছেন। রক্ত ঢেলেছেন। কখনো কখনো দূত পাঠিয়েছেন। কখনো কখনো ব্যক্তিকে হাসিমুখে বলেছেন,

এখনো কি তোমার ঈমান আনার সময় হয় নি? বুদ্ধিমান ব্যক্তি বুঝতে পারতো, যদি আল্লাহ ব্যতিত আর কেউ থাকতো, তাহলে এতদিনে সে তার ডাকে সাড়া দিত।

সুইডেনে কোরআন পোড়ানো

সম্প্রতি ঈদের দিনে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পুড়ায় সুইডেনের এক নাগরিক। পশ্চিমা বিশ্ব মানুষকে বাক স্বাধীনতার নামে সর্বদাই ধোঁকা দিয়ে আসছে।

ধরুন, কেউ পশ্চিমা বিশ্বের কোনো সরকার প্রধানের ব্যাঙ্গ করে রাস্তায় তার ছবি ছিঁড়লো। কিংবা তার কোনোভাবে অবমাননা করলো।

তখনও কি এটি বাক স্বাধীনতা হবে? উক্ত ব্যক্তিকে এরূপ কাজ করার দরুন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আটক করবে। শাস্তি দিবে।

এসব ক্ষেত্রে তারা এটাকে বাক স্বাধীনতা বলতে নারাজ। কিন্তু নিজেদের বেলায় তারা ষোল আনা।

অথচ কোনো একটা গোষ্ঠীর উপর আঘাত করে তারা তখন বাক স্বাধীনতার গুণগান গায়।

তারা তখন সেটার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয় না। সুইডেনের এই ঘটনায় সবচেয়ে বিক্ষিপ্ত চিন্তার কথা ছিল সুইডিশ প্রধানমন্ত্রীর।

সে বললো, এটি যদিও বাক স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত তবুও উচিৎ নয় নি।

এর মানে কি, আমরা আজ থেকে খৃষ্টানদের ধর্মগ্রন্থ ছিঁড়ে ফেলতে পারবো? ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ নিয়ে ফুটবল খেলতে পারবো? প্যাগানদের ধর্মগ্রন্থ নিয়ে আঁছাড় দিতে পারবো?

কখনোই না। আমার ধর্মই আমাদেরকে এসব করতে নিষেধ করে। ধর্ম আমাকে শালীনতা শিখিয়েছে। আামার ধর্ম আমাকে মানবতাবোধ শিখিয়েছে।

একজন মুসলিম হিসেবে আমার এটি মেনে নেয়া কষ্টকর যে, মানুষ মুসলিমদের নিয়ে কটুক্তি করবে। সমস্যা নাই। যত পার করো।

একটা সময় ইনশাল্লাহ আবার বিশ্বজয়ের তাওফিক দিবেন আমাদের। আমাদের পূর্বপুরুষদের ন্যায় আমরাও আবার ইউরোপের দরজায় আঘাত হানবো।

আমরা পুর্বপুরুষদের অসম্পূন্ন কাজ অবশ্যই সম্পূন্ন করবো ইনশাল্লাহ। সেদিনের জন্য কি আপনি, আমি প্রস্তুত?

তথ্যসুত্র

নয়াদিগন্ত। কালের কণ্ঠ। বিবিসি বাংলা। ডয়েচ এভেলে বাংলা

New York times.

Scroll to Top