লাখ লাখ অনুসারী দিয়ে কি হবে

আপনার লাখ লাখ অনুসারী রয়েছে। লাখ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। আপনার ফেইসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউব বা অন্য সোস্যাল অ্যাকাউন্টের রিচ অনেক বেশি।

আপনার ব্লু ব্যাজও রয়েছে অ্যাকাউন্টে। আপনার একটা কথার দাম অনেক। বহু মানুষ আপনাকে অনুসরণ করে। বহু মানুষ আপনার সাজেশন ফলো করে।

আপনি কি আপনার এই জোশ-খ্যাতিকে ইসলামের জন্য ব্যয় করছেন? আপনি কি আপনার লাখ লাখ অনুসারী বা ফলোয়ারদের নিকট ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দিচ্ছেন?

বর্তমান সময়ের এই যুগে মানুষ সহজেই অন্যের সাথে কানেক্ট হতে পারে। ইউটিউব সর্ট, ফেইসবুক রিলস, টিকটক, লাইকিসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে আপনি সহজেই মানুষের নিকট পৌছাঁতে পারেন।

আপনার একটা পোস্ট দেখে কেউ হয়তো আপনার অজান্তেই ভালো পথে ফিরে আসবে। আপনি জানতেও পারবেন না।

রাসূল সা. এর একটি হাদীস রয়েছে। যেটি সুনানে আবু দাউদ শরীফের ৪৬০৯ নং হাদীসে বর্ণিত আছে,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنَ الْأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا، وَمَنْ دَعَا إِلَى ضَلَالَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ الْإِثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئًا

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি সৎপথের দিকে ডাকবে, সে তার অনুসারীর সমান সাওয়াব পাবে, অথচ অনুসরণকারীর সওয়াব কমানো হবে না। অপরদিকে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে ডাকবে সে তার অনুসারীর সমান পাপে জর্জরিত হবে, তার অনুসারীর পাপ মোটেও কমানো হবে না।

মাআ’যাল্লাহ ওয়া সুবহানাল্লাহ! আরেকবার পড়ুন হাদীসটি। হাদীসটিতে দুইটা অংশ রয়েছে। আর প্রতিটা অংশের প্রতিদান ভিন্ন ভিন্ন।

প্রথমটি হলো, আপনি সৎপথে আহবান করলে আপনি তার সমপরিমাণ সওয়াব পাবেন। অথচ আপনার অনুসারীর সওয়াব কমবে না। সুবহানাল্লাহ!

দ্বিতীয়টি হলো, আপনি অসৎপথে আহবান করলে অনুসারীর সমপরিমাণ গুনাহ্ কামাই করবেন। তবে অনুসারীর গুনাহ এতে কমবে না। মাআ’যাল্লাহ!

সৎপথে আহবানকারীদের গুরুত্ব কেমন

কুরআনের বহু জায়গায় তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। যারা সৎপথে আহবান করে ও অসৎ পথ থেকে নিষেধ করে। সূরা আলে ইমরানে তাদেরকে সর্বোত্তম জাতি বলা হয়েছে।

আপনি যখন মানুষকে সৎকাজের আদেশ দেয়া ‍শুরু করবেন তখন দেখতে পারবেন, একটা অংশ আপনার বিরোধিতা করবে।

কেউ হয়তো কটুক্তি করবে। কেউ বা হেয় করবে। এসব দিকগুলো এড়িয়ে চলা হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ সূরা আনকাবুতের ৬৯ নং আয়াতে বলেন,

وَ الَّذِیۡنَ جَاهَدُوۡا فِیۡنَا لَنَهۡدِیَنَّهُمۡ سُبُلَنَا ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ

যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন।

এই আয়াতটি নাজিল হয়েছে মক্কায়। আর এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো নবীজির সাহাবী এবং স্বয়ং নবীজি সা.। তবে এটির বিধান সর্বকালে প্রযোজ্য।

আপনি যদি মানুষকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করেন তাহলে আপনি হবেন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি ও শ্রেষ্ঠ জাতির অন্তর্ভুক্ত।

এ প্রসঙ্গে সূরা আলে ইমরানের ১১০ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন,

کُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ تَنۡهَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ

তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত,যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করবে।

Scroll to Top