দামেস্ক অবরোধ – ইয়ারমুকের যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয়ের পর হযরত ওমর রাঃ মুসলিম বাহিনীকে সামনে অগ্রসর হতে আদেশ দেন।
তখন সেনাপতি আবু উবাইদা রাঃ মুসলিম মুজাহিদদের শামের গুরুত্বপূর্ণ শহর দামেষ্কে নিয়ে আসেন। তিনি সেখানে গিয়ে শহরের একপাশে অবরোধ করে রাখেন।
আর অন্যপাশে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ এর নেতৃত্বে সৈন্য মোতায়েন করেন। পাশাপাশি তিনি আমর ইবনে আস রাঃ কে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করেন।
শহর প্রাচীর জয় – দামেস্ক অবরোধ
দামেস্কের প্রাচীন ছিল অনেক শক্তিশালী। মুসলমানগণ কয়েকদিন পর্যন্ত বাইরে শিবির স্থাপন করে রেখেছিলেন।
এ সময় উভয়পক্ষই তীর ও গোলাবর্ষণ করতে থাকে।
রোমান সম্রাট হিরাক্লিয়াস দামেস্কের অধিবাসীদের সহায়তায় রাজধানী হিমস থেকে সাহায্যকারী দল প্রেরণ করে।
কিন্তু আবু উবায়দা রাঃ সাহায্যের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় তারা পৌছতে পারে নি।
শহরবাসীরা একদিন কোনো এক উৎসবে মত্ত ছিল। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ সুযোগ পেয়ে কয়েকজন মুজাহিদকে নিয়ে প্রাচীরে উঠে যান।
এরপর ভেতর থেকে প্রাচীরের দরজা খুলে ফেলেন। মুসলিম সৈন্যরা তখন উক্ত প্রবেশদ্বার দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে থাকে।
শহরবাসীদের সন্ধি – দামেস্ক অবরোধ
দামেস্কের অধিবাসীরা যখন দেখলো, একপাশ দিয়ে মুসলমানরা প্রবেশ করে ফেলেছে তখনই তারা অপরপাশের দরজা খুলে আবু উবাইদা রাঃ এর সাথে সন্ধিচুক্তি করে।
আবু উবাইদা রাঃ খালিদ রাঃ এর পূর্ব আক্রমণের ব্যাপারে অবগত ছিলেন না। তাই তিনি সন্ধিচুক্তি করে নেন।
অন্যদিকে খালিদ রাঃ রোমানদের সাথে যুদ্ধ করতে করতে শহরে প্রবেশ করছিলেন।
শেষে যখন পূর্ণাঙ্গ বিষয়টি সামনে আসে তখন দেখা যায়, শহরের একটি অংশ তরবারির মাধ্যমে বিজিত হয়েছে এবং অপর অংশ সন্ধির মাধ্যমে আয়ত্তে এসেছে।
এ জন্য এখানে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। যেহেতু সন্ধি পরে হয়েছে, যুদ্ধ আগেই শুরু হয়েছিল তাই অনেকেই বলছিলেন,
আমরা শহরবাসীদের কোনো শর্ত মানতে বাধ্য নই।
আবার অনেকে বলছিলেন, যেহেতু সেনাপতি সন্ধি করে ফেলেছেন তাই এখন সন্ধি রক্ষা করাটাই বাধ্যতামূলক। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়,
শহরের অর্ধেক অংশে সন্ধিচুক্তি হিসেবে কার্যক্রম চলবে। বাকী অর্ধেক অংশে যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় হিসেবে কার্যক্রম চলবে।
তথ্যসুত্র
মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস। খন্ড ৩। পৃষ্ঠা ১১৮-১১৯
আরো পড়ুন
ইয়ারমুকের যুদ্ধ কিভাবে সংগঠিত হয়
আবু আব্দুল্লাহ শিয়ায়ী কে ছিলেন