সাঈদ ইবনে আমের রাঃ বিরুদ্ধে হিমসবাসীর অভিযোগ

হযরত ওমর রাঃ হিমসের গভর্নর হিসেবে প্রেরণ করেন সাঈদ ইবনে আমের রাঃ কে। যখন হযরত ওমর রাঃ হিমস শহরে যান তখন সেখানকার লোকদের জিজ্ঞাসা করেন,

হে হিমসবাসী! তোমাদের গভর্নর কেমন? লোকেরা তখন হযরত সাঈদ রাঃ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। হিমসের অধিবাসীদের অতিরিক্ত অভিযোগের কারণে তারা ছোট কুফা নামে পরিচিত ছিল।

লোকেরা ওমর রাঃ কে বললো, সাঈদ বিন আমের রাঃ এর বিরুদ্ধে আমাদের চারটি অভিযোগ রয়েছে।

প্রথমত,  তিনি অনেক দেরী করে ঘর থেকে বের হন। ওমর রাঃ বললেন, এটা খুবই গুরুতর অভিযোগ।

দ্বিতীয়ত, তিনি রাতে কারো ডাকে সাড়া দেন না। ওমর রাঃ বললেন, এটা তো আরো গুরুতর অভিযোগ।

তৃতীয়ত, মাসে একদিন তিনি আমাদের সাথে দেখা করেন না। ওমর রাঃ বললেন, এটা আরো বেশি গুরুতর অভিযোগ।

চতুর্থত, তিনি কখনো কখনো অজ্ঞান হয়ে যান। ওমর রাঃ তখন সাঈদ ইবনে আমের রাঃ কে ডাকলেন। ওমর রাঃ তখন বললেন,

হে আল্লাহ! আমি সাঈদের সম্পর্কে যা ধারণা রাখি, তা যেন মিথ্যা না হয়। এরপর লোকদেরকে এক এক করে অভিযোগ উপস্থাপন করতে বললেন।

হিমসবাসীর অভিযোগ ও সাঈদ রাঃ এর জবাব

লোকেরা তখন বললো, তিনি অনেক বেলা করে ঘর থেকে বের হন।

ওমর রাঃ তখন সাঈদ রাঃ এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,

সাঈদ রাঃ তখন বললেন, আমি চাই নি কেউ এই কারণটি জানুক। তারপরও আপনি যেহেতু জানতে চাচ্ছেন, তাই বলছি।

আমার বাড়িতে কোনো কাজের লোক নেই। তাই আমি নিজেই রুটির খামির তৈরি করি। পরে রুটি বানাই। এরপর আমি লোকদের নিকট আসি।

ওমর রাঃ তখন জনগণকে বললেন, দ্বিতীয় অভিযোগ কী?

তখন লোকেরা বললো, তিনি রাতে কারো ডাকে সাড়া দেন না। ওমর রাঃ তখন সাঈদ রাঃ কে এর কারণ জিজ্ঞাসা করে বলেন,

এটা কেন হয় তোমার? সাঈদ রাঃ বললেন, আমি দিনকে নির্দিষ্ট করে রেখেছি লোকদের জন্য। আর রাতকে আমি আল্লাহর ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করে রেখেছি।

এবার লোকদের বললেন, তার বিরুদ্ধে তোমাদের পরের অভিযোগ কী?

লোকেরা বললো, মাসে একদিন তিনি আমাদের সাথে দেখা করেন না। ওমর রাঃ তখন সাঈদ রাঃ কে এর কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন।

তখন সাঈদ রাঃ বললেন, আমার কোনো কাজের লোক নেই। আর আমার জামা-কাপড়ও তেমন বেশি নেই।

তাই সেদিন আমি আমার জামা-কাপড় ধুয়ে দিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করি।

ওমর রাঃ তখন লোকদের বললেন, তার বিরুদ্ধে তোমাদের চতুর্থ অভিযোগ কি?

তখন লোকেরা বললো, কখনো কখনো তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। ওমর রাঃ তখন এর কারণ সাঈদ বিন আমের রাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন,

তখন তিনি বললেন, আমি মক্কায় খুবাইব রাঃ কে হত্যার নির্মম দৃশ্য দেখেছি।

যখন আমার সেই দৃশ্য মনে হয় তখন আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।

উমর রাঃ এর উচ্ছ্বাস প্রকাশ

ওমর রাঃ তখন বললেন, মহান আল্লাহর অশেষ রহমত। আমার ধারণা তিনি মিথ্যা প্রমাণিত করেন নি।

এরপর তিনি সাঈদ রাঃ কে এক হাজার দিনার প্রদান করেন।

ওমর রাঃ বললেন, এগুলো নিজের জন্য ব্যবহার করো। সাঈদ রাঃ তখন সেসকল দিরহাম আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেন।

তথ্যসুত্র

জীবন ও কর্ম: ওমর রাঃ ১০০-১০২

আমর ইবনে আস রাঃ এর বিরুদ্ধে মিসরবাসীদের অভিযোগ

একজন জান্নাতি মানুষের বিদায়

সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাঃ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ

অ্যাংলিকান চার্চ এবং বিশ্বাসের প্রবর্তন

কাবা ঘর কি মূর্তিপূজকদের মন্দির নাকি মুসলমানদের ইবাদতখানা?

হজ্জের রীতি-নীতি কি মক্কার মুশরিকদের থেকে নেয়া?

সাঈদ বিন আমের রাঃ কোন জায়গার গভর্নর ছিলেন

তিনি হিমস শহরের গভর্নর ছিলেন। আর তাকে গভর্নর নিযুক্ত করেন হযরত ওমর রাঃ

কবে সাইদ বিন আমের রাঃ মৃত্যুবরণ করেন

হিমসের গভর্নর থাকা অবস্থায় ২০ হিজরীতে তিনি ইন্তিকাল করেন। অন্য মতে, ২১ হিজরীতে তিনি ইন্তিকাল করেন

গাজ্জার জন্য অনুদান

৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে তুফানুল আকসা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জায় অসংখ্য মানুষ আহত ও শহীদ হয়েছে। বহু মানুষ নিজেদের ঘর-বাড়ী হারিয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে গাজ্জার ৯৮% মানুষ অনাহারে জীবন-যাপন করছে। গাজ্জার মানুষের এই দুঃসময়ে আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে কে দাঁড়াবে?

আর-রিহলাহ ফাউন্ডেশন তুফানুল আকসা যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জার জন্য ডোনেশন সংগ্রহ করে আসছে। এই মহান কাজে আপনিও আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।

অনুদান দিন

Scroll to Top