আবু মিহজান সাকাফি রাঃ – কাদিসিয়ার যুদ্ধের সময় সেনাপতি সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস রাঃ অসুস্থ ছিলেন।
তাই তিনি যুদ্ধের ময়দানের পাশে একটি দালানের ছাদ থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করছিলেন।
ময়দানে তিনি হযরত খালিদ বিন উরফুতা রাঃ কে স্থলাভিষিক্ত নির্ধারণ করেন। কিন্তু আবু মিহজান রাঃ এটি মেনে নিতে পারেন নি।
যুদ্ধের পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় তাই সাদ রাঃ কে নিজের ঘরে বন্দী করে রাখেন। যাতে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে না পারেন।
অনুতাপ
আবু মিহজান রাঃ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না পারায় অত্যন্ত দুঃখ-যাতনায় ভুগছিলেন। সে সময় সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস রাঃ এর বাঁদী সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন।
তখন আবু মিহজান রাঃ তাকে বললেন, আমাকে শেকল খুলে দিয়ে একটি ঘোড়ার ব্যবস্থা করে দাও।
আমি যুদ্ধের ময়দানে যাব। আর সন্ধার মধ্যেই আমি ফিরে আসবো।
বাঁদির মনে তখন দয়ার উদ্রেক হয়। তিনি তখন শেকল খুলে সাদ রাঃ এর ঘোড়াটি আবু মিহজান রাঃ কে দিয়ে দিলেন।
যুদ্ধে অংশগ্রহণ
আবু মিহজান রাঃ তখন সোজা যুদ্ধক্ষেত্রে চলে যানে। সেখানে সাহসিকতার সাথে লড়াই করতে থকেন। শত্রুদেরকে তিনি পুরোপুরি পিছু হটিয়ে দেন।
মুসলিম মুজাহিদরা পেরেশান হয়ে যায় যে, এই বীর-বাহাদুর কোথা থেকে এলো? সেনাপতি সাদ রাঃ ও আবু মিহজানকে চিনতে পারছিলেন না।
তার নিকট আশ্চর্য লাগলো যে, ঘোড়াটা তো চেনা চেনা লাগে। আর লড়াইটা তো আবু মিহজানের মতো।
কিন্তু আবু মিহজানকে তো বন্দী করে রাখা হয়েছে।
তার নিকট এটি অস্পষ্ট থেকে যায়। সন্ধাবেলায় যখন যুদ্ধ বিরতি দেয়া হয় তখন উভয় বাহিনী আপন আপন তাবুতে ফিরে যায়।
আবু মিহজান রাঃ পুনরায় এসে নিজেকে শেকল দিয়ে বন্দী করে ফেলেন। সাদ রাঃ উক্ত দালানের ছাদ থেকে নিচে নেমে এসে ঘোড়ার নিকট গিয়ে দেখেন, সেটি ক্লান্ত এবং শরীর থেকে ঘাম ঝরছে।
বাঁদীকে জিজ্ঞাসা করার পর সে সত্য ঘটনা খুলে বলে। তখন সাদ রাঃ আবু মিহজানকে মুক্তি দিয়ে দেন।
আবু মিহজান সাকাফি রাঃ এর প্রতি মদপানের অভিযোগ
ইতিহাসের একটি বর্ণনায় পাওয়া যায়, আবু মিহজান রাঃ কে মদপানের অভিযোগে বন্দি করা হয়েছিল। কিন্তু এটি দুর্বল একটি বর্ণনা।
মূলত আবু মিহজান রাঃ কে নিয়ম ভঙ্গের দায়ে বন্দি করা হয়েছিল। তা ছাড়া তিনি কিছু কবিতা রচনা করেছিলেন,
যাতে মদপানের উপকারিতা উল্লেখ করা ছিল।
সাদ রাঃ এর নিকট এটি ভালো ঠেকে নি। তাই তাকে বন্দি করার পর কেউ কেউ ভাবলেন, হয়তো মদপানের কবিতা রচনা করার কারণে তাকে বন্দি করা হয়েছে।