হযরত উসমান রা. এর খেলাফতের শেষ ছয় বছরের দিকে সাবায়ী ফেতনা তথা আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার ফেতনা ভালোভাবেই শেকড় গেড়েছিল।

ইসলামী শাসনব্যবস্থাকে টুকরো টুকরো করা এবং গৃহযুদ্ধ উসকে দেয়াই ছিল তাদের টার্গেট।

হযরত উসমান রা. এর গুরুত্বপূর্ণ গভর্নরদের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের ব্যাপারে মিথ্যা অভিযোগ তুলতে লাগলো।

তারা প্রথমে এই কথা উঠালো যে, হযরত উসমান রা. স্বজনপ্রীতি করেন। আর অন্যদের বঞ্চিত করেন।

আরো বলা হয় যে, উসমান রা. প্রবীণদের বাদ দিয়ে যুবকদের প্রাধান্য দিতেন।

নিজ নিজ পদে যদি উক্ত যুবকরা যোগ্য হয়ে থাকে, তাহলে কি তাদের বিরুদ্ধাচরণ করা আদৌ যুক্তিসঙ্গত?

যুবকদের দ্বারা বিজয়ের পতাকা

হযরত উসমান রা. কর্তৃক নিযুক্ত গভর্নররা আশানুরূপ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।

আব্দুল্লাহ বিন আমের রা. বসরার গভর্নর হয়ে খোরাসান অঞ্চলে ধারাবাহিক বিজয় শুরু করেন।

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবি সারাহ রা. মিসর ও আফ্রিকার জিডিপি উন্নয়নে অবদান রেখেছিলেন ও সমুদ্রে যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করেছিলেন।

কিন্তু এরপরও সুষ্কৃতিকারীরা হযরত উসমান রা. এর ব্যবস্থাপনাগত এসব সিদ্ধান্তকে নেতিবাচক রঙ চড়িয়ে উম্মাহকে বিভ্রান্ত করছিল।

এসব ভয়ঙ্কর সাবায়ী ফেতনা এর মধ্যে একটা সময় অনেক সাধারণ মানুষ এবং কিছু উল্লেখযোগ্য মানুষও ফেঁসে গেল।

যাদের মধ্যে মুহাম্মাদ বিন আবু হুজাইফা ও মুহাম্মাদ বিন আবু বকর রা. অন্যতম।

প্রবীন গভর্নরদের পরিবর্তনের সময় তাদের প্রক্রিয়া

কুফার গভর্নর হযরত সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস রা. ছিলেন আশআরে মুবাশশারা তথা জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীদের অন্যতম।

প্রক্ষান্তরে তার পরিবর্তে যাকে কুফার শাসনব্যবস্থায় নিযুক্ত করা হয়েছিল, তিনি হলেন মক্কাবিজয়কালে ইসলামগ্রহণকারী হযরত ওয়ালিদ ইবনে উকবা রা.

আর মিসরের গভর্নর হযরত আমর বিন আস রা. এর স্থলে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবি সারাহ রা. কে।

হযরত মুসা আশআরী রা. এর পরিবর্তে বসরায় নিযুক্ত করা হয়েছিল আব্দুল্লাহ বিন আমের রা. কে। দায়িত্বগ্রহণের সময় তার বয়স ছিল ২৫ বছর।

ঐতিহাসিকগণ এই সাহাবীদেরকে দানশীল, সাহসী, সম্রান্ত, দূরদর্শী ও ন্যায়পরায়ণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

হযরত আবু মুসা আশআরী রা. যখন জানতে পারলেন বসরায় তার পরিবর্তে আব্দুল্লাহ বিন আমের রা. কে নিযুক্ত করা হয়েছে তখন তিনি বসরাবাসীকে সম্বোধন করে বললেন,

তোমাদের জন্য এমন এক যুবক আসছে, যার দাদি ও ফুফিদের বংশ অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত।

তথ্যসুত্র

মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৫১-১৫৪

Scroll to Top