লাউড স্পিকারে আযান

লাউড স্পিকারে আযান – এককালের ভারতবর্ষ আর বর্তমান ইন্ডিয়া, দুটোই সীমানা ও নামকরণের দিক থেকে এক হলেও এর মধ্যে যুগ হিসেবে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য।

এককালের ভারতবর্ষে শুরুতে শাসন করতো সনাতন ধর্মের ব্যক্তিরা। তাদের তাদের ধর্মে জাত-বর্ণ হিসেব করে পুরো জাতিকে করে ফেলেছিল কয়েকভাগে বিভক্ত।

কেউ ছিল শূদ্র, কেউ ছিল বাহ্মণ, কেউ বা ছিল জমিদার। এত এত জাত-পাত করার কারণে মানুষ স্বভাবগতই ছিল ক্রুদ্ধ ও রাগান্নিত।

এরপর রাজা দাহিরের হটকারিতার কারণে হাজ্জাজ বিন ইউসূফের ‍পৃষ্ঠপোষকতায় এবং মুহাম্মাদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে মুসলমাদের আগমণ ঘটলো এই ভূমিতে।

মুসলমানদের মধ্যে ছিল না কোনো জাত-পাত। ছিল না কোনো বিভাজন। প্রথম প্রথম সনাতনীরা অন্য দশটা ধর্মের মতো মুসলিম ধর্মকে মনে করলেও ক্রমে ক্রমে তাদের ভুল ভাঙ্গে।

তারা বুঝতে পারে, এটা একটি সাম্যের ধর্ম। এই ধর্ম কোনো যাযক কিংবা পুরোহিতের হাতে বন্দী হয়। এই ধর্ম কোনো হুজুরের কথায় পরিবর্তিত হয় না।

এরপর ভারতবর্ষে ঘটে যায় এক বিপ্লব। যেই বিপ্লব ক্রমে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে ভারতবর্ষের উত্তর থেকে দক্ষিণে। পূর্ব থেকে পশ্চিমে।

বর্তমান ইন্ডিয়ান পলিসি

মোগলদের পতনের পর ইংরেজরা ক্ষমতা দখল করে ভারকতবর্ষের। তারা এসেই বুঝতে পারে, মুসলমাদের কাবু করা এতটা সহজ নয়। মুসলমানরা কখনো ইংরেজদের দখলদারিতা মেনে নিবে না।

তাই তারা হিন্দুদের সাথে হাত মেলায়। হিন্দুদেরকে তারা জমি ও জায়গির দিয়ে বড়লোক বানিয়ে দেয়।

তারা তখন হিন্দু-মুসলিমেদের সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরায়।

যারা ফলে শত শতবার দাঙ্গা সংগঠিত হয়েছে এই ভারতবর্ষের মাটিতে। ইন্ডিয়ান হিন্দুদের মধ্যে রয়েছে কয়েকটি ভাগ।

কেউ সাধারণ হিন্দু। কেউ ধর্মীয় নিয়ম-নীতি মেনে হিন্দু। কেউ বা উগ্রবাদী বা জঙ্গীবাদী হিন্দু।

এই জঙ্গী হিন্দুরা ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছে কিছু ভিত্তিহীন ঘটনার দাবীতে।

পরবর্তীতে আরো বেশ কিছু মসজিদ মাদ্রাসার উপর হামলা করে।

এই হামলার ফলে ক্রমে ক্রমেই হিন্দুদের সাথে মুসলমাদের বিরোধ বাড়তে থাকে। পরিশেষে আসি বর্তমানে।

মুসলমাদের আযান দেয়া

আযান হলো, মুসলিম ধর্মের অন্যতম একটি বিধান বা কার্যক্রম। আযানের মাধ্যমে মানষকে ডাকা হয় সাম্যের দিকে। মানুষকে ডাকা হয় নীতি-আদর্শের দিকে।

মানুষের সাথে স্রষ্টার সম্পর্ককে গভীর করতে এই আযান মুসলমাদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

কট্টরপন্থি ও জঙ্গীবাদী হিন্দুরা  লাউড স্পিকারে আযান দেয়া সহ্য করতে পারলো না।

তারা নিষেধাজ্ঞা জারি করলো যে, মাইক ব্যবহার করে কোনো রকম আযান দেয়া যাবে না।

কারণ, মাইকের আওয়াজে নাকি তাদের সমস্যা হয়।

ভালো কথা। তাদের সমস্যা হলে তো তা বন্ধ করতে হবেই।

কিন্তু তারা যে পূজার সময় ঢোল-তবলা বাজিয়ে আমাদের কানের অবস্থা বারোটা বাজিয়ে দেয়,

সেটা নিয়ে কি আমরা কখনো তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি?

তাদের উদ্গট কথাবার্তায় আমরা কি তাদের কিছু বলেছি? তাহলে তারা কেন মুসলমাদের একদম সহ্য করতে পারে না। এর মূল কারণ হলো, দৃষ্টিভঙ্গি।

আমাদের কলেজে

আমি যেই টেকনোলজিতে পড়ি, সেই টেকনোলজিতে তিনজন হিন্দু স্টুডেন্টও পড়ে। তাদের সাথে কোনো আমাদের ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়িমূলক আচরণ হয় নি।

তাদের সাথে আামদের সম্পর্ক, আমরা মানুষ হিসেবে। সে তার ধর্মে স্বাধীন।

আমি আমার ধর্মে স্বাধীন। উগ্রবাদীতা কখনো ভালো কিছু বয়ে আনে না।

ইন্ডিয়ানরা মনে করে, তারা বাংলাদেশ-পাকিস্থান একত্রিত করে প্রাচীন ভারতবর্ষে রূপ দিবে। কিন্তু সার কথা হলো,

এটা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ, তার আগেই হাদীসের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হিসেবে আবির্ভূত হবে।

আরো পড়ুন

সেই শিশুটির কি হবে?

কট্টরপন্থি হিন্দুদের মুসলিম হত্যার হুমকি

ভারতের মন্ত্রীসভায় কট্টর জঙ্গী হিন্দুরা কেন?

About The Author

Scroll to Top