মিসরে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা

মিসরে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা – ৩১ হিজরীতে চক্রান্তকারীরা মিসরে তাদের তাদের কর্মকাণ্ড চালায়। সেখানে তারা এই স্লোগান উঠায় যে, মিসরের গভর্নর হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবু সারাহ রা. অযোগ্য ব্যক্তি।

মিসরে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা এর এই অপপ্রচারে প্রভাবিত হয়ে কতিপয় সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিও বিষয়টি যাছাই-বাছাই না করে ফলাও করতে থাকে।

তাদের মধ্যে মুহাম্মাদ বিন আবু হুজাইফা ও মুহাম্মাদ বিন আবু বকর রা. অন্যতম।

৩২/৩৪ হিজরীতে পারস্যের সাথে যাতুস সাওয়ারা নামক যুদ্ধে মুজাহিদ বাহিনী মুহাম্মাদ বিন আবু হুজাইফা ও মুহাম্মাদ বিন আবু বকর রা. কে দেখলেন,

তারা মুসলমানদের থেকে পৃথক হয়ে অবস্থান করছেন। এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বললেন,

তারা উসমান রা. এর নিযুক্ত আমিরের অধীনে থেকে যুদ্ধ করা পছন্দ করেন না।

৩৩ হিজরীর ঘটনা

এ সময়ে চক্রান্তকারীরা সন্তর্পণে, নীরবে-নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছিল। বিশেষত কুফা এবং বসরাতে তাদের অবস্থান ছিল বেশ সরগরম।

কুফার গভর্নর ছিলেন হযরত সাঈদ ইবনে আস রা. আর বসরার গভর্নর ছিলেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমের রা.।

৩৩ হিজরীতে কুফা ও বসরায় এমন দুটি ঘটনা ঘটে, যা শাসকদের পক্ষে সাধারণ নিয়মের বাহিরে গিয়ে অপরাধীদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার পদক্ষেপ নিতে হয়।

প্রথম ঘটনা

ঘটনাটি ঘটলো কুফায়। কুফার গভর্নর হযরত সাঈদ ইবনে আস রা. এর নিকট কতিপয় আরব এক যুবককে শুধু এই অপরাধে প্রহার করলো যে,

সে শাসকদের প্রশংসা করে কিছু বলছিল। ফলে উক্ত আরব ব্যক্তিদেরকে শামের গভর্নর হযরত মুয়াবিয়া রা. এর নিকট পঠিয়ে দেয়া হলো।

হযরত মুয়াবিয়া রা. তাদের সামাজিক অবস্থানের প্রতি লক্ষ্য রেখে তাদের সাথে প্রথমে অথিতিসুলভ আচরণ করলেন।

তিনি নিজের হেকমতের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছিলেন যে, এই লোকগুলো নীচতা ও হিংসার রোগে আক্রান্ত।

কুরাইশদের নেতৃত্বের কারণে তারা হিংসা পোষণ করছে।

তাই তিনি তাদেরকে নম্রভাষায় বুঝানোর পর বললেন, তোমাদের যা মন চায় করো।

কিন্তু কখনো আল্লাহর দেয়া সীমারেখা অতিক্রম করিও না। আল্লাহর অবাধ্যতা ছাড়া তোমাদের যেকোনো আচরণ সহ্য করা হবে।

এরপর হযরত মুয়াবিয়া রা. খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত উসমান রা. এর নিকট লিখে পাঠালেন যে,

এই লোকগুলো নির্বোধপ্রকৃতির লোক। তারা ন্যায়-ইনসাফ দেখে হাঁপিয়ে উঠেছে।

ইরাকে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা

কুফায় অবস্থানরত সেই আরব যুবকরা তাদের অবাধ্যতার কারণে অনুশোচিত হলো। ফলে ভিত্তিহীন অপপ্রচার বন্ধ হয়ে গেল।

এ জন্য মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা হিংসায় পুড়তে লাগলো। তাই আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা বসরায় চলে গেল।

বসরা হলো ইরাকের একটি অঞ্চল।

সে অতিগোপনে মানুষকে তার দলে যুক্ত করতে লাগলো। এই সংবাদ জানতে পেরে বসরার গভর্নর আব্দুল্লাহ বিন আমের রা. মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে সাবাকে নজরবন্দী করলেন।

তাকে তার কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। কিন্তু সে বিভিন্ন তাল-বাহানা করে নিজের পক্ষে যুক্তি পেশ করতে লাগলো।

ফলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমের রা. তাকে বসরা থেকে বহিষ্কার করে দিলেন। যাতে তার মাধ্যমে মানুষ আক্রান্ত না হয়।

তথ্যসুত্র

মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৬৬-১৬৮

গাজ্জার জন্য অনুদান

৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে তুফানুল আকসা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জায় অসংখ্য মানুষ আহত ও শহীদ হয়েছে। বহু মানুষ নিজেদের ঘর-বাড়ী হারিয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে গাজ্জার ৯৮% মানুষ অনাহারে জীবন-যাপন করছে। গাজ্জার মানুষের এই দুঃসময়ে আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে কে দাঁড়াবে?

আর-রিহলাহ ফাউন্ডেশন তুফানুল আকসা যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জার জন্য ডোনেশন সংগ্রহ করে আসছে। এই মহান কাজে আপনিও আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।

অনুদান দিন

Scroll to Top