ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধের খবর

গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধের রেশ এখনো চলমান। এই যুদ্ধ আরো কতদিন চলবে, তা নিয়ে বিষেষজ্ঞরা বলতে পারছেন না।

প্রতিদিনই প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। মানুষ মারা যাচ্ছে। গেল এক সপ্তাহে (আজ ২৭ অক্টোবর ২০২৩ শুক্রবার) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে গাজা অঞ্চলের অধিবাসীরা।

আজকের সংবাদ পড়তে ক্লিক করুন

জায়োনিস্ট দখলদার ইসরায়েলিরা সাদা ফসফরাস, বোম্বিং নিক্ষেপ করে অনেক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। যেই নিহতদের মধ্যে বড় একটি অংশ শিশুরা।

তারা বেশ কয়েকবার হাসপাতালে এবং হাসপাতাল নিকটবর্তী স্থানেও হামলা চালিয়েছে। কিছুক্ষণ পূর্বে পাওয়া সর্বশেষ তথ্যমতে,

গাজা অঞ্চলে সর্বমোট ৭৩২৬+ জন শহীদ হয়েছেন। এই সংখ্যা প্রতিনিয়্যত বাড়ছে।

হাসপাতালগুলোতে ইলেকিট্রিসিটি না থাকায় সেখানে রোগীকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছে না তারা।

৭ অক্টোবর থেকে সেখানে প্রায় ৩০ জন সাংবাদিক জায়োনিস্ট ইসরাইলি সৈন্যদের হামলায় নিহত হন।

এছাড়াও অনেক সাংবাদিকের পুরো পরিবারকেও শহীদ করে দেয় দখলদার ইসরাইলিরা।

তিনদিন আগে মার্কিন রক্তখেকো প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিল, গাজায় যে এত এত লোক মারা যাচ্ছে, আমরা এই তথ্য বিশ্বাস করি না।

এই প্রেক্ষিতে ২৫ তারিখ গাজার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই যুদ্ধে নিহতদের নাম, বয়সসহ তালিকা প্রকাশ করে। সেটি ছিল ২১২ পৃষ্ঠার বিশাল তালিকা।

সেই তথ্যানুযায়ী শিশুদের মৃত্যুর হার হলো ৪১.৪%, প্রাপ্তবয়ষ্কদের মৃত্যুর হার ৫৮.৬% সব মিলিয়ে ১০০%।

পুরুষদের মৃত্যুর হার ৫৫.৫%, মহিলাদের মুত্যুর হার ৪৪.৫% সব মিলিয়ে ১০০%।

ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধের
ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধের
ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধের

উপরোক্ত চার্টগুলো দেখে নিশ্চয় একটা পূর্ণাঙ্গ ধারণা হবে আপনাদের। আমরা আজকে পাওয়া সর্বশেষ খবরগুলো নিয়ে একটু পর্যালোচনা করি।

আন্তর্জাতিক কাভারেজ

সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময়ের বিষয়ে আলোচনা “অগ্রগতি” হচ্ছে এমন খবরের পরে, দোহা ইনস্টিটিউটের ইব্রাহিম ফ্রাইহাত বলেছেন যে চুক্তির শর্তগুলির উপর নির্ভর করে খবরটি একটি আনন্দদায়ক।

আজকে আমেরিকার সেনাবাহিনী সিরিয়া ও ইরানের কিছু সেনাঘাটিতে আক্রমণ করেছে।  হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র বলেছেন,

সিরিয়ায় ইরান-সমর্থিত বাহিনীর ওপর মার্কিন বিমান হামলা অস্ত্রের ডিপোকে লক্ষ্য করে এবং “আত্মরক্ষার জন্য” ছিল।

ইরান প্রতিশোধ নেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জন কিরবি এবিসির গুড মর্নিং আমেরিকাকে বলেন,

“তাদের পাল্টা আঘাত করা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

যদি তারা তা করে, আমরা আমাদের সৈন্যদের এবং আমাদের সুবিধাগুলি রক্ষা করার জন্য যা করতে হবে তা করব। আমরা এর জন্য প্রস্তুত থাকব।”

ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, 7 অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে অন্তত 1,400 জন জায়োনিস্ট দখলদার নিহত হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ইসরাইলে কোনো বেসামরি নাগরিক নেই। সবাই সামরিক।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ গাজার জন্য একটি “মানবিক জোট” গড়ে তুলতে চাইছে।

 নয়াদিল্লিতে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী পুলিশ বিক্ষোভকারীদের অনেককে আটক করেছে বলে জানায় আল জাজিরা।

ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘ বলছে, ওয়াশিংটন বর্তমান যুদ্ধের পরিসংখ্যান নিয়ে সন্দেহ উত্থাপন করার পরে

গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া মৃতের সংখ্যা পূর্বেও “বিশ্বাসযোগ্য” বলে প্রমাণিত হয়েছে।

“অতীতে, গাজা উপত্যকায় সংঘাতের পাঁচ, ছয় চক্র, এই পরিসংখ্যানগুলিকে বিশ্বাসযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল।

কেউ এই পরিসংখ্যানগুলিকে সত্যিই চ্যালেঞ্জ করেনি,” ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সাংবাদিকদের বলেছেন।

ল্যাজারিনি বলেছেন যে, গাজা অঞ্চলে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইউএনআরডব্লিউএ এর ৫৭ জন কর্মী নিহত হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দ্বারা সরবরাহ করা অঞ্চলের সামগ্রিক জনসংখ্যার সাথে নিহত ফিলিস্তিনিদের অনুপাতের সাথে সংস্থার মৃতের সংখ্যা কীভাবে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল তা ব্যাখ্যা করে।

জেনিনে ইসরায়েলি দখলদাররা অভিযানের সময় শিরিন আবু আকলেহ (২০২২ সালে জায়োনিস্টরা তাকে হত্যা করে।

তিনি ছিলেন আল জাজিরার গাজা অঞ্চলের সাংবাদিক) স্মৃতিসৌধ ধ্বংস করেছে ইসরায়েল সেনাবাহিনী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী আনাদোলু বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, “সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে রাস্তায় ভাঙচুর করেছে এবং আবু আকলেহের স্মৃতিসৌধ ধ্বংস করেছে।”

গাজা অঞ্চল

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গাজার ১২টি বড় হাসপাতালে ক্রিটিক্যাল অপারেশন চালানোর জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৯৪,০০০ লিটার জ্বালানি প্রয়োজন।

অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ডব্লিউএইচওর প্রতিনিধি রিচার্ড পিপারকর্ন সতর্ক করেছেন যে, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরবরাহের তীব্র ঘাটতি ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

1,000 রোগীর কিডনি ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন, 130 জন অকাল শিশু ইনকিউবেটরে, 2,000 ক্যান্সার রোগী এবং রোগীদের পর্যাপ্ত যত্ন নেওয়া যাচ্ছে না।

পিপারকর্ন বলেন, “মাতৃত্ব ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে কারণ তীব্র জ্বালানি সংকট শিশুদেরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।”

তিনি গাজায় জ্বালানি, খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সামগ্রীর টেকসই সরবরাহের জন্য আহ্বান জানান।

যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি গাজার অভ্যন্তরে সাহায্যের জন্য নিরাপদ পথের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

মিসরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে অল্প অল্প ত্রানের ট্রাক প্রবেশ করিয়ে বিশ্বকে তারা দেখাচ্ছে যে, আমরা খাদ্য পৌঁছিয়ে দিচ্ছি।

কিন্তু এটা একটা চক্রান্ত। মিসর আগে থেকেই হামাসকে সন্ত্রাসী বলে। একটি মুসলিম দেশ হয়ে তারা কাফেরদের পুতুল হয়ে আছে।

গাজায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০/৫০০ ট্রাক বোঝাই খাদ্য ও মেডিসিন দরকার। অথচ প্রতিদিন পাঠানো হচ্ছে ২০/১৫টা।

এমনকি কিছুদিন পূর্বে সোস্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল,

সেখানে ট্রাক ঠিকই যাচ্ছে। কিন্তু ট্রাকের ভেতর থেকে মালামাল সরিয়ে রাখছে মিশর সরকার।

আল জাজিরা থেকে আজকের ঘটনার লাইভ দেখুন

লেখাটি অন্যের নিকট শেয়ার করে তাকেও জানার সুযোগ করে দিন....

About The Author

Scroll to Top