ফিলিস্তিনের খবর ১০ অক্টোবর ২০২৩

ফিলিস্তিনের খবর ১০ অক্টোবর ২০২৩ – হামাস ইসরাইলের এই যুদ্ধে যদিও স্বাভাবিকভাবেই অনেক ফিলিস্তিনি নিজেদের ঘর-বাড়ি, স্ত্রী-সন্তান, পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে হারিয়েছেন।

তারপরও তাদের মনে একটি আশা আছে, একদিন জয় আসবে ইনশাল্লাহ। সেদিন তারা শত্রুদের ভয়ে বিনিদ্রা রজনী যাপন করবে না।

যুদ্ধের তৃতীয় দিনে যদিও ফিলিস্তিনের অন্যতম শহর গাজা অঞ্চলের হতাহত ছিল চোখে পড়ার মতো। এরপরও হামাস নতুন আঙ্গিকে যুদ্ধের মোড় ঘুরাতে সামর্থ্য হয়েছে।

ফিলিস্তিনের পরবর্তী আপডেট জানতে ক্লিক করুন

আল জাজিরার তথ্যমতে, বর্তমানে (১০ অক্টোবর ২০২৩) গাজা অঞ্চলে ৮৩০ জন ফিলিস্তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন এবং আহত হয়েছে ৪ হাজার ২৫০ মানুষ। নিহতদের মধ্যে ১৪০+ জন শিশু এবং ১২০+ জন নারী।

পশ্চিম তীরে ১৮ জন শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছে ১০০ জন।

এছাড়াও প্রায় ৯০০+ ইহুদি নিহত হয়েছে। যদিও এটি নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, গতকালই ইসরাইলের একটি সংবাদ মাধ্যম বলেছিল, ১৫০০+ ইহুদি নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ফিলিস্তিনে এখন ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে। তারা ৮৪টি স্কুলে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে।

হামাসের নিকট বর্তমানে ইসরাইলের সামরিক এবং বেসমারিক অনেকে জিম্মি হিসেবে আছে। এছাড়াও কিছু বিদেশী ব্যক্তিও তাদের নিকট জিম্মি হিসেবে আছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ জন ছাত্র একত্রে একটি বিবৃতি জারি করে। সেখানে তারা বলে, বর্ণবাদী এবং কুসংস্কারের কারণে ইসরাইল ফিলিস্তিনের উপর কয়েক দশক ধরে সহিংস আক্রমণ করছে।

এই যুদ্ধের জন্য তারা ইসরাইলকে দায়ী করেছে। এছাড়াও এই চিঠিতে আরো বেশ কিছু মুসলিম ফেডারেশনেরও সাক্ষর হয়েছে।

এই ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়েছে হার্ভার্ডের প্রাক্তন ইসরাইলের দালাল ছাত্ররা। তারা এই ঘটনা ঘটায় বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবস্থা নিতে আহবান করেছে। (কুকুরের দলেরা!)

মিসরের বর্তমান সরকার পূর্বেই মুসলমানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সে এখন বলছে, তারা এসব ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয়।

এছাড়াও তারা ফিলিস্তিনের উপর অবরোধ আরোপ করার চেষ্টা করছে। পূর্বে নাকি তারা ইসরাইলকে এই হামলার খবর দিয়েছিল। (বিশ্বাসঘাতক প্রতি যুগেই জন্মায়)

বাংলায় ফিলিস্তিনের খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন টেলিগ্রামে

1.

মিসরের সাথে গাজার দক্ষিণ সীমান্তে রাফাহ ক্রসিং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গাজা অঞ্চলে নিরাপদ করিডোর তৈরির আহবান জানিয়েছে।

গাজা ও মিশর সীমান্তের রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছে বিমান হামলা হয়েছে।

ইসরায়েলি পুলিশ বলেছে যে তাদের সাইবার-ইউনিট গ্রুপের তহবিল সংগ্রহের জন্য হামাসের দ্বারা ব্যবহৃত ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাকাউন্টগুলি জব্দ করেছে।

নিউইয়র্ক-ভিত্তিক কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) এর শেরিফ মনসুর “সব পক্ষকে” মনে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন যে সাংবাদিকরা বেসামরিক নাগরিক এবং চলমান লড়াইয়ের মধ্যে তাদের লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।

শুক্রবার ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আরব ও মুসলিম বিশ্বের “সাধারণ সংহতি” করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস।

ফিলিস্তিন

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ বলেছেন, সমস্ত ফিলিস্তিনিদের “এই যুদ্ধে অংশ নিতে হবে …”।

গাজা অঞ্চলে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় হাসপাতালগুলোতে জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য একটি নিরাপদ স্থান দেওয়ার আহবান জানিয়েছে।

দখলদার ইসরায়েলিরা এখন কাপুরুষের মতো ফিলিস্তিনি অ্যাম্বুলেন্সগুলোতে আক্রমণ করা শুরু করেছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে অসংখ্য মানুষ।

এছাড়াও গতকাল ইসরাইল গাজা অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগগুলোতে রোগীকে সঠিক সেবা প্রদান করতে পারছে না।

ইসরাইল গতকাল সারারাত ধরে ফিলিস্তিনের গাজা শহরে বোমা বর্ষণ করেছে। তারা আবাসিক ভবনগুলোতে হামলা করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

বহু মানুষ হতাহত হওয়ার পাশাপাশি ৬ জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন এবং ২ জন নিঁখোজ রয়েছেন।  

জায়োনিস্ট ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছে, গাজা অঞ্চলকে সম্পূর্ণভাবে অবরোধ করা হলো। এখানে বিদ্যুৎ, খাদ্য বা জ্বালানী প্রবেশ করবে না। (আল্লাহ সহায় হোন ফিলিস্তিনিদের)

জাতিসংঘের ত্রান সংস্থা ফিলিস্তিনের জন্য ত্রান পৌছাতে পারছে না। এছাড়াও ফিলিস্তিনের গাজায় অবস্থিত জাতিসংঘের ত্রান সংস্থার অফিস দখলদার ইসরায়েলিদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

তবে ভুলে গেলে চলবে না যে, গাজা অঞ্চল ২০০৭ সাল থেকেই দখলদার ইসরাইল কর্তৃক অবরুদ্ধ ছিল। সেখানে প্রায় ২.৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে।

দখলদার জায়োনিস্ট ইসরায়েলিরা গাজায় অবস্থিত সংসদ ভবন এবং ফিলিস্তিনের সরকারি ভবনগুলোরও ক্ষতিগ্রস্থ করে। সেগুলো তাদের টার্গেট লিস্টে ছিল।

গতকাল প্রচার করা স্পেন ও ফ্রান্সের ফিলিস্তিনের সহায়তা না করার সংবাদটির বিরোধিতা করেছে।

তারা বলেছে, যদিও হামাস তাদের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসী সংগঠন (কারণ, তাদের গুরুদেরকে মুসলমানরা জাহান্নামে পাঠিয়েছে।),

তারপরও ফিলিস্তিনিদের ত্রান সহায়তা পাঠানোর প্রয়োজন রয়েছে। ইতিমধ্যেই গাজা অঞ্চলকে অবরোধের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। যদিও জানা নেই, এতে কোনো লাভ হবে কিনা!

2.

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বাঙ্কার বাস্টার নামে পরিচিত একটি শক্তিশালী ধরণের বোমা মোতায়েন করে উত্তর-পশ্চিম গাজার টানেল লক্ষ্যবস্তু করেছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী হোসেইনি খামেনির একটি বক্তৃতার পর ইরান ফিলিস্তিনকে সাহায্যের জন্য “ইচ্ছুক” বলেছে।

ডেনমার্ক ফিলিস্তিনিদের উন্নয়ন সহায়তা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে,

ডেনমার্কের উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রীর বরাত দিয়ে রিতজাউ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে। (কুফরী শক্তি একজোট থাকবেই)

লেবাননের সাথে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে মারাত্মক সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ হিজবুল্লাহ সশস্ত্র গোষ্ঠী ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে কামান ও রকেট নিক্ষেপ করেছে।

জিনাব, গাজার শিফা হাসপাতালে কর্মরত একজন নার্স, যখন তিনি জানতে পারলেন যে তার স্বামী, যিনি একজন ডাক্তারও তিনি ইসরায়েলি বিমান হামলার সময় নিহত হয়েছেন।

তিনি চিৎকার করে বলেন, আমার স্বামী শহীদ হয়েছেন।

“আমি যখন হাসপাতালে কাজ করছিলাম, তখন তিনি শহীদ হন। আহতদের নিয়ে কাজ করার সময় জানতে পারলাম আমার স্বামী শহীদ হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, অবরুদ্ধ উপত্যকায় চিকিৎসা সুবিধাগুলো ধ্বংসের পথে।

হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয়ের দুই সদস্য – জাওয়াদ আবু শাম্মালা এবং জাকারিয়া আবু মামার – গাজার খান ইউনিসে বিমান হামলায় শহীদ হয়েছেন।

ইরাকি রাজনীতিবিদ হাদি আল-আমিরি গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন করার জন্য ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে লক্ষ্যবস্তু করার হুমকি দিয়েছেন।

বাগদাদে এক সমাবেশে আল-আমিরি বলেন, “যদি আমেরিকানরা এই সংঘাতে প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করে …

আমরা আমেরিকানদের সকল লক্ষ্যবস্তুকে বৈধ বলে বিবেচনা করব … এবং আমরা এটিকে লক্ষ্যবস্তু করতে দ্বিধা করব না।”

ইয়েমেনের হুথি নেতা আবদেল-মালেক আল-হুথি বলেছেন,

গাজায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হস্তক্ষেপ করলে তারা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ সহ সামরিক বিকল্প গ্রহণ করে জবাব দেবে।

আল হুথি বলেছেন, “গাজার ক্ষেত্রে লাল রেখা রয়েছে,” এবং যোগ করেছে যে তারা অন্যান্য গোষ্ঠীর সাথে সমন্বয় করতে প্রস্তুত।

ইসরাইল

ইসরায়েলের একটি সঙ্গীত উৎসবে হামাস যোদ্ধাদের হাতে অন্তত 260 জন নিহত হয় এবং অন্যদের বন্দী করে গাজায় ফিরিয়ে আনা হয়।

দখলদার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এখন ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মানসিকভাবে আঘাত করার চেষ্টা করছে। তারা বলছে,

“ফিলিস্তিনিরা যেন গাজা থেকে পালিয়ে মিসরে চলে যায়। তাহলে আর তাদেরকে কিছু করা হবে না।”

অথচ এরা এটা বলে না যে, তারা নিজেরোই যোদ্ধাদের সাথে পেরে উঠছে না।

এছাড়াও ইসরাইল মিসরের সাথে গোপনে আঁতাত করে মিসর-ফিলিস্তিন সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেছে,

ইসরাইল ও গাজার আশেপাশে তারা ১৫০০+ হামাস যোদ্ধাদের লাশ পেয়েছে। এটা যে কতবড় মিথ্যাচার সেটা সকলেই বুঝবে।

হয়তো গতকালকে হঠাৎ করে প্রচরিত হওয়া তাদের ১৫০০+ জায়োনিস্টদের মৃত্যুর খবর ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এই সংবাদ মিথ্যাবাদীরা ছড়াচ্ছে।

ইসরায়েলিরা হামাসের সাথে পেরে উঠতে পারছে না দেখে তারা গাজা, পশ্চিম তীরের বেসামরিক লোকদেরকে শহীদ করে দিচ্ছে।

মিথ্যাবাদী ইসরায়েলিরা দাবী করছে, তারা নাকি গাজা অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। আর মাটির নিচে নাকি কিছু সংখ্যক হামাসের যোদ্ধারা লুকিয়ে আছে।

বর্তমানে ইসরাইলে সৈন্য সংকট দেখা দেওয়ায় ইসরাইল থেকে দেশ ত্যাগ করা তাদের নাগরিকদেরকে পূনরায় দেশে ফিরিয়ে আনছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন যে

সপ্তাহান্তে হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলার পর “জায়নবাদী সরকার” সামরিক ও গোয়েন্দা বিভাগের পরাজয় হয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন যে তেহরান ইসরায়েলের উপর হামাসের হামলার সাথে জড়িত ছিল না।

হামলার পর তার প্রথম টেলিভিশন ভাষণে খামেনি বলেন,

“যারা ইহুদিবাদী শাসকের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছিল আমরা তাদের হাতে চুমু খাই”। (সুবিধাবাদী জিন্দাবাদ!)

উগ্র ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী, ইতামার বেন গভির , ঘোষণা করেছেন যে

তার মন্ত্রণালয় ইসরায়েল এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে “বেসামরিক নিরাপত্তা দল”কে সশস্ত্র করার জন্য 10,000 বন্দুক কিনছে।

3.

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, গাজা স্ট্রিপ থেকে প্রায় 40 কিমি (25 মাইল) দূরে বিয়ারশেবাতে সাইরেন বাজছে, সম্ভাব্য আগত ক্ষেপণাস্ত্রের সতর্কবার্তা।

হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র ইসরায়েলি শহর আশকেলনের বাসিন্দাদের চলে যাওয়ার সময়সীমা দিয়েছে।

বর্তমানে গাজা থেকে ইসরায়েলের আশকেলন শহরের দিকে রকেট ছোড়া হচ্ছে।

এর আগে দলটি বেসামরিক নাগরিকদের বিকাল ৫টার আগে স্থানীয় এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছিল।

হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড বলছে, তারা বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

তার অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি পৃথক বার্তায়, সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে যে তারা তেল আবিবকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে।

ইসরায়েলি ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন জানিয়েছে, তেল আবিবের উপকণ্ঠে গুশ ড্যান এলাকায় সাইরেন শোনা যাচ্ছে।

ফিলিস্তিনের বর্তমান লাইভ আপডেট জানুন আল জাজিরা থেকে

লেখাটি অন্যের নিকট শেয়ার করে তাকেও জানার সুযোগ করে দিন....

About The Author

Scroll to Top