পূর্ববর্তীদের অনুসরণ ও ইসলাম

পূর্ববর্তীদের অনুসরণ ও ইসলাম – মানুষ অনুকরণ ও অনুসরণ করতে পছন্দ করে। প্রাচীনকাল থেকেই এটি ঘটে আসছে। বনী ইসরাইলের বাছূর পূজার কথা নিশ্চয় মনে আছে।

মুসা আ. যখন তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কোন জিনিষ তোমাদের বাছুরের পূজা করতে উদ্বুদ্ধ করেলো? তখন তারা বললো, আমরা তো আমাদেরকে দেয়া সম্পদগুলো আগুনে নিক্ষেপ করি।

তারপর পুড়ে যাওয়া সম্পদ দিয়ে সামেরি একটি বাছুর নির্মাণ করে। আর সেটা ডেকে উঠে। তাই ভাবলাম, সেটাই হয়তো আমাদের ইলাহ্। (বিস্তারিত: সূরা আরাফ, ৭-১৪৮)

এ ছাড়াও এই বনী ইসরাইলকে যখন আল্লাহ ফেরআউনের কবল থেকে রক্ষা করলেন এবং তাদেরকে সমুদ্রের মধ্য দিয়ে বিস্ময়করভাবে পার করে দিলেন, তখন তারা একটা জাতির সামনে উপস্থিত হলো।

সেই জাতি মূর্তিপূজা করতো। এটা দেখে বনী ইসরাইলরা মুসা আ. কে বললো,

আমাদেরকেও তাদের মতো একটা মূর্তি তৈরি করে দিন। যাতে আমরা পূজা-অর্চনা করতে  পারি।

তখন হযরত মুসা আ. বললেন, তোমরা তো একটা মূর্খ সম্প্রদায়। এসব লোক যেই ‍মূর্তিপূজায় লিপ্ত আছে তা তো তাদের ধ্বংস করবে। (বিস্তারিত: সূরা আরাফ, ১৩৬-১৪১)

অনেক মানুষ এমন রয়েছে, যারা নিজের বাবা অথবা দাদা কিংবা বড় কোনো ব্যক্তিকে এমন কোনো কাজ করতে দেখেছে, যা তার নিকট ভালো লেগেছে।

তখন সে উক্ত কাজটি নিজেও করা শুরু করে কোনো দলীল ছাড়াই। তাকে যদি বলা হয়, তোমার এই কাজের তো কোনো ভিত্তি নেই। তখন সে বলে, আমি বড়দের দেখেছি এটা করতে।

কুরআনের একটা আয়াতে এই কাজ সম্পর্কে তাদেরকে জবাব দেয়া হচ্ছে। আল্লাহ বলেন,

وَاِذَا قِیۡلَ لَہُمُ اتَّبِعُوۡا مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ قَالُوۡا بَلۡ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلۡفَیۡنَا عَلَیۡہِ اٰبَآءَنَا

যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যে বাণী নাযিল করেছেন তার অনুসরণ কর, তখন তারা বলে, না।

আমরা তো কেবল সে সকল বিষয়েরই অনুসরণ করব, যার উপর আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে পেয়েছি। (সূরা বাকারা, ১৭০)

পূর্ববর্তীদের অনুসরণ ও ইসলাম
পূর্ববর্তীদের অনুসরণ ও ইসলাম

কুরআনে হযরত ইবরাহীম আ. ও তার মূর্তি ভাঙ্গার ঘটনা খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

তিনি যখন তার পিতা ও সম্প্রদায়কে জিজ্ঞাসা করলেন, এই মূর্তিগুলো কি? যেগুলোর পূজায় তোমরা রত আছ?

তখন তারা বললো, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের এগুলোর পূজা করতে দেখেছি। (বিস্তারিত: সূরা আম্বিয়া, ৫১-৭০)

এখানেও সেই একই যুক্তি দেয়া হচ্ছে যে, পূর্বপুরুষদের দেখেছি এই কাজ করতে।

ঠিক তদ্রুপভাবে বর্তমানেও কিছু কিছু বেদআত শয়তান আমাদের মধ্যে প্রবেশ করায়। যেগুলোর কোনো ভিত্তি কুরআন-হাদীসে নেই।

নবীজি সা. বিদায় হজ্জ্বের দিন বলেছেন,

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي قَدْ تَرَكْتُ فِيكُمْ مَا إِنِ اعْتَصَمْتُمْ بِهِ فَلَنْ تَضِلُّوا أَبَدًا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ

হে জনগণ! আমি তোমাদের নিকট এমন বস্তু রেখে যাচ্ছি, যা মজবুতভাবে ধারণ করলে তোমরা কখনই পথভ্রষ্ট হবে না। আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও তাঁর নবীর সুন্নাহ।

সুতরাং আমাদের শিরক, বিদআত এবং শিরকে খফী তথা গোপন শিরক থেকে অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে।

আর পাশাপাশি নিজেরাও অভিজ্ঞ কোনো আলেমের তত্ত্বাবধানে কুরআন-হাদীসের জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।

তথ্যসুত্র

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড ১, ই.ফা.

ইসলাম কিউএ

রেসপন্স টু এন্টি ইসলাম আর্টিকেল

আরো পড়ুন

কুরআন একটি জীবন্ত মোজেজা

দ্বীনের দাওয়াত ও প্রয়োজনীয়তা

ইসলামের দৃষ্টিতে মাহরাম কারা?

জিহাদের পূর্ণাঙ্গ বিধি-বিধান ও আয়াত এবং হাদীস

গাজ্জার জন্য অনুদান

৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে তুফানুল আকসা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জায় অসংখ্য মানুষ আহত ও শহীদ হয়েছে। বহু মানুষ নিজেদের ঘর-বাড়ী হারিয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে গাজ্জার ৯৮% মানুষ অনাহারে জীবন-যাপন করছে। গাজ্জার মানুষের এই দুঃসময়ে আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে কে দাঁড়াবে?

আর-রিহলাহ ফাউন্ডেশন তুফানুল আকসা যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জার জন্য ডোনেশন সংগ্রহ করে আসছে। এই মহান কাজে আপনিও আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।

অনুদান দিন

Scroll to Top