ওহুদ যুদ্ধে ওমর – জিহাদের ময়দানে হযরত ওমর রা. থাকতেন সামনের সারিতে। তিনি কখনো যুদ্ধ দেখতে পিছুটান নিতেন না। পরাজয় নিশ্চিত জানলেও লক্ষ্যে অবিচল থেকে এগিয়ে যেতেন।

ওহুদের যুদ্ধেও ওমর রা. এর এই গুণের প্রতিফলন ঘটেছিল। এই যুদ্ধ ছিল রাসূল সা. এর সাথে তার দ্বিতীয় যুদ্ধ। প্রথম যুদ্ধ ছিল বদরের যুদ্ধ

ওহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের ছোট একটি ভুলের কারণে প্রায় পরাজয় হতে যাচ্ছিল।

তখন ওমর রা. রাসূলকে রক্ষার জন্য ঢাল হয়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে যান।

ওহুদের দিন আবু সুফিয়ানের হুংকার

ওহুদ যুদ্ধের শেষে আবু সুফিয়ান ডাক দিয়ে বলছিল, মুহাম্মাদ – আবু বকর – ওমর এই তিনজনের কোনো একজন কি বেঁচে আছে?

নবীজি তখন বললেন, তার কথার জবাব দিও না। পরপর তিনবার আবু সুফিয়ান এভাবে হুংকার দিয়ে বললো। শেষে ওমর রা. আর চুপ থাকতে পারলেন না।

তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর শত্রু! তোমার কথা সত্য নয়। আল্লাহ তা’আলা তোমাকে অপমানিত করেছেন।

তখন আবু সুফিয়ান বললো, হুবল (আরবের এক প্রতিমা) বিজয়লাভ করেছে।

নবীজি তখন বললেন, এখন আবু সুফিয়ানের কথার জবাব দাও। সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা তাহলে কি বলবো?

নবীজি তখন বললেন, তোমরা বলো যে আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং অধিক মহিমান্বিত।

আবু সুফিয়ান সাহাবীদের এই কথা শুনে বললো, উজ্জা (জাহেলিয়্যাতের সময়ের এক মূর্তির নাম) আমাদের। তোমাদের নয়।

নবীজি তখন সাহাবীদের বললেন, তার কথার জবাব দাও। সাহাবারা আবার বললেন, আমরা কি বলবো?

নবীজি বললেন, তোমরা বলো যে আল্লাহ আমাদের অভিভাবক। আর তোমরা অভিভাবকহীন।

আবু সুফিয়ান তখন রাগে ক্ষোভে বললো, বদরের এক দিনের বদলা একদিন, যুদ্ধ এখনো শেষ হয় নি। তখন ওহুদ যুদ্ধে ওমর রা. বলেছিলেন,

আমাদের নিহত ব্যক্তিরা জান্নাতে আর তোমাদের নিহত ব্যক্তিরা জাহান্নামে রয়েছে। তখন ওমর রা. কে আবু সুফিয়ান বললো,

আমরা কি মুহাম্মাদকে হত্যা করতে পেরেছি? ওমর বললেন, না। বরং তিনি এখন তোমার কথা শুনতে পাচ্ছেন।

কাফেরদের মাথাব্যাথার কারণ কারা ছিল – ওহুদ যুদ্ধে ওমর

এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, মুহাম্মাদ সা. এবং আবু বকর রা. ও ওমর রা. ছিলেন ইসলামের সবচেয়ে শক্তিধর ব্যক্তি।

কাফেরদের নিকট এই তিনজন মাথাব্যাথার কারণ ছিল। তারা চাইতো যে, যেভাবেই হোক এই তিনজনকে যেন হত্যা করা যায়।

কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য কখনো সফল হয় নি। ওহুদ যুদ্ধে ওমর ছিলেন একজন বীর-বাহাদুর ব্যক্তি।

তথ্যসুত্র

জীবন ও কর্ম: ওমর রা.। পৃষ্ঠা ৯৭-৯৯

আরো পড়ুন

আবু আব্দুল্লাহ শিয়ায়ীর উত্থান কিভাবে ঘটে?

নওমুসলিমদেরকে আবু বকর রা. কিভাবে কাফেরদের নির্যাতন থেকে রক্ষা করতেন?

আসওয়াদ আনাসির ফেতনায় কারা পতিত হয়েছিল?

কুরআনে এতিমের অধিকার সম্পর্কে কি বলা হয়েছে?

ওমর রা. এর মদীনায় হিজরত ও কাফেরদের আত্মসম্মানে আঘাত

গাজ্জার জন্য অনুদান

৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে তুফানুল আকসা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জায় অসংখ্য মানুষ আহত ও শহীদ হয়েছে। বহু মানুষ নিজেদের ঘর-বাড়ী হারিয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে গাজ্জার ৯৮% মানুষ অনাহারে জীবন-যাপন করছে। গাজ্জার মানুষের এই দুঃসময়ে আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে কে দাঁড়াবে?

আর-রিহলাহ ফাউন্ডেশন তুফানুল আকসা যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের গাজ্জার জন্য ডোনেশন সংগ্রহ করে আসছে। এই মহান কাজে আপনিও আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।

অনুদান দিন

Scroll to Top